নয়াদিল্লি: ভ্যাকসিন-বরাদ্দ নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাতের মধ্যেই টিকা বণ্টন নিয়ে নতুন নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্র।
মঙ্গলবার, কেন্দ্রের তরফে এক নতুন সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, কোন রাজ্য কত ডোজ ভ্যাকসিন পাঠানো হবে, তা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জনসংখ্যা, সংক্রমণ ও টিকাকরণ প্রক্রিয়ার হার দিয়ে নির্ধারণ করা হবে।
একইসঙ্গে, নতুন নির্দেশিকায় ভ্যাকসিন নষ্ট হওয়ার ঘটনাবলিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন নষ্ট করলে সরাসরি তার প্রভাব পড়বে পরবর্তী বরাদ্দে।
ভ্যাকসিন নষ্ট হওয়া নিয়ে রাজ্যে ও কেন্দ্রর মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই তীব্র বাদানুবাদ চলছে। মে মাসে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক পরিসংখ্যান বলছে, বিভিন্ন রাজ্যে চূড়ান্তভাবে ভ্যাকসিন নষ্ট হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে ঝাড়খণ্ড (৩৭ শতাংশ), ছত্তিসগড় (৩০ শতাংশ), তামিলনাড়ু (১৫.৫ শতাংশ), জম্মু ও কাশ্মীর (১০.৮ শতাংশ), মধ্যপ্রদেশ (১০.৭ শতাংশ)। সেখানে জাতীয় গড় হল ৬.৩ শতাংশ।
দেশজুড়ে ১৮-ঊর্ধ্বদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা গতকালই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী ২১ জুন থেকে কার্যকর হবে ওই টিকাকরণ প্রকল্প।
একই দেশে, কেউ বিনামূল্যে পাবে, আর কাউকে পয়সা দিতে হবে - এই নিয়ম নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া সুরে ভৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। তারা বলে, ১৮-৪৪ বছর বয়সিদের দাম দিয়ে ভ্যাকসিন নেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্র। ৪৫ ঊর্ধ্বদের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় হল ১৮-৪৪ বছর বয়সিদেরও করোনায় আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে করোনায় মারাও যাচ্ছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ১৮-৪৪ বছরের জন্য কেন্দ্রের দাম দিয়ে টিকাকরণের নীতি দৃশ্যতই অযৌক্তিক এবং খামখেয়ালি মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে।
বিরোধীরা অনেক আগে থেকেই লাগাতার প্রশ্ন করে আসছে, কেন বাজেটে ভ্যাকসিনের জন্য বরাদ্দ ৩৫ হাজার কোটি টাকা দিয়ে সব দেশবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিচ্ছে না মোদি সরকার? এই প্রেক্ষাপটে অবস্থান পাল্টালেন নরেন্দ্র মোদি। যা নিয়ে কটাক্ষের সুরে বিরোধীদের গলায়।
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২১ জুন থেকে ১৮ বছরের উর্ধ্বে সবাইকে কেন্দ্র বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবেন বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাও করেছেন নরেন্দ্র মোদি। তা হল, এবার থেকে আর রাজ্য সরকারগুলিকে ভ্যাকসিন কিনতে হবে না। উৎপাদক সংস্থার কাছ থেকে কেন্দ্র সরকার ভ্যাকসিন কিনে রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেবে।