নয়া দিল্লি: মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হবে নয়ডার বিতর্কিত টুইন টাওয়ার। প্রায় শেষ তার প্রস্তুতি। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে বিস্ফোরক বসানোর প্রক্রিয়া। রবিবার দুপুর আড়াইটেয় শুরু হয়ে যাবে আবাসন ধ্বংসের কাজ। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ডিনামাইট’।
কীভাবে হবে সেই কাজ?
১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড। ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক। সব তৈরি, শুধু ট্রিগারে চাপ পড়ার অপেক্ষা। ব্যস! তারপরই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে নয়ডার ৪০ তলা উঁচু ‘টুইন টাওয়ার’। ধূলিসাৎ হয়ে যাবে UNESCO’র হেরিটেজ কুতুব মিনারের চেয়েও উঁচু এই জোড়া ইমারত। যার নাম দেওয়া হয়েছে- ‘অপারেশন ডিনামাইট’।
নয়ডা-গ্রেটার নয়ডার এক্সপ্রেসওয়ের পাশে সেক্টর 93A-তে। অবস্থিত বিতর্কিত এই জোড়া ইমারত। একটি টাওয়ারের নাম ‘অ্যাপেক্স’ এবং অপরটির নাম ‘সিয়ান’। দুর্নীতির ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই সুবিশাল জোড়া আবাসন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যে কাজের তত্ত্বাবধানে আছে মুম্বইয়ের এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিং নামে এক সংস্থা।
ইতিমধ্যেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারা। দুটি ইমারতের পিলারে ড্রিল দিয়ে গর্ত করা হয়েছে। প্রত্যেক গর্তে ভর্তি করা হয়েছে বিস্ফোরক। জোড়া হয়েছে ডিটোনেটর। শেষে ক্যাপ বসিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে সেই গর্ত। যে প্রক্রিয়াকে বলা হয় ক্যাপিং।এক একটি পিলারে ৪-৫টি করে গর্ত করা হয়েছে। সবক’টি গর্তে রাখা বিস্ফোরকের পরিমাণ ৪০ থেকে ১২০ গ্রাম। দুই ইমারত মিলিয়ে মোট ৯ হাজার ৬৪২টি গর্তে ভরা হয়েছে বিস্ফোরক ও ডিটোনেটর।
আরও পড়ুন, একটা পা বাইরে, আরেকটা পা আমি জেলের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে আছি, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য উদয়নের
টুইন টাওয়ার থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরণ ঘটাবেন ইঞ্জিনিয়াররা। প্রথমে বিস্ফোরণ ঘটানো হবে প্রাইমারি ফ্লোরে। যেটি ঢেকে দেওয়া হয়েছে কালো কাপড় দিয়ে। ইমারতের এই অংশের সমস্ত পিলারে বিস্ফোরক রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে নজর থাকবে সেকেন্ডারি ফ্লোরের দিকে। যে অংশের ৬০ শতাংশ পিলারেই বসানো হয়েছে বিস্ফোরক। বিস্ফোরণ ঘটাতে লাগানো হয়েছে অন্তত ২০ হাজার ডিটোনেটর। ডিটোনেটরের তার টেনে নিয়ে হবে ইমারতের ১০০ মিটার দূরত্বে। সেখানেই থাকবে কন্ট্রোল প্যানেল। নির্দিষ্ট সময়ে, কন্ট্রোল প্যানেল থেকে ট্রিগার টিপলেই বিস্ফোরণ ঘটবে। ধূলিসাৎ হয়ে যাবে গগনচুম্বী জোড়া ইমারত।
সূত্রের খবর, ঠিক হয়েছে, প্রথমে ‘সিয়ান’ নামের ইমারতে বিস্ফোরণ ঘটানো হবে। তার ৬০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরে পরবর্তী বিস্ফোরণ ঘটানো হবে ‘অ্যাপেক্স’ টাওয়ারে। বিস্ফোরণের জন্য সর্বাধিক ৯ সেকেন্ড সময় লাগবে। সবমিলিয়ে মোট ১২ থেকে ১৩ সেকেন্ড সময় লাগবে দু’টি ইমারত ধ্বংস হতে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের সময় মাত্র ৬ জনকে ওই চত্বরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৩ জন ব্লাস্টার, ১ জন পুলিশ অফিসার এবং ২ জন প্রোজেক্ট ম্যানেজার থাকবেন। বিস্ফোরণস্থল থেকে ১০০ মিটার দূরে তাঁরা থাকবেন ট্রিগারের সামনে। এ ছাড়া আর কাউকে ওই চত্বরে থাকার অনুমতি নেই। বিস্ফোরণের ১০ মিনিট পরে ৬ জনের দল এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন।
সবমিলিয়ে রবিবার যখন গোটা দেশের নজর ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটীয় মহারণের দিকে থাকবে, ঠিক তখন জোরাল বিস্ফোরণে ধূলিসাৎ হয়ে যাবে নয়ডার গগনচুম্বী জোড়া ইমারত।