পানাজি: ‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।’ গোয়ায় গিয়ে এই কথাই বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 


তিনদিনের সফরে গোয়ায় রয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘গোয়াতে নতুন সকাল আনতে হবে। আমি ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করি, অভিন্ন ভারতে বিশ্বাস করি।’ মমতার আহ্বান, ‘একটা সুযোগ তৃণমূল কংগ্রেসকে দিন। টিএমসি-র অর্থ টেম্পল মস্ক চার্চ। নাগরিক সমাজ আমাদের দলে যোগ দিন।


মমতা বলেন, ’আমিও গোয়ার সন্তান। আমাকে বিমানবন্দরে কালো পতাকা দেখানো হয়েছে, আমি নমস্তে বলেছি। তৃণমূল কখনও আপস করে না, আমাদের পার্টি বিক্রি হওয়ার নয়।’


তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘সাইনবোর্ড হওয়ার জন্য গোয়ায় আসিনি। আমরা ভবিষ্যতে মহিলা সংরক্ষণ ও তারুণ্যে গুরুত্ব দেব।’ মমতা বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে আমরা গতিধারার নামে ট্যাক্সি কিনতে আর্থিক সাহায্য দিই। মৎস্যজীবীদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়, ঘর ভাঙলে সারানো হয়।’ 


তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের আমলে পশ্চিমবঙ্গে দারিদ্র্য কমেছে ৪০ শতাংশ। বাংলায় আমরা কন্যা সন্তানদের সবাইকে স্কলারশিপ দিই। পড়ুয়াদের ট্যাব, সাইকেল দিয়ে সাহায্য করা হয়।’ তিনি যোগ করেন, ‘গোয়ায় আসার আগে আমাদের পোস্টার বিকৃত করা হয়েছে। এসব করলে ভারত থেকে আপনারা মুছে যাবেন।’ 


মমতা বলেছেন, ‘আপনারা আমাদের বিশ্বাস করলে, লড়তে আমরা তৈরি। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে আমরা তৈরি। গোয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় আমরা বদ্ধপরিকর। কোনওরকম বিভেদমূলক রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’


তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুজো, কালীপুজো হয়, ইফতারে যাই, চার্চে প্রার্থনায় যোগ দিই। সংখ্যালঘুদের আমরা ভরসা দিই, আমরা ভাগাভাগির রাজনীতি করি না। দেশকে আমরা ভাগ করতে চাই না। 


তৃণমূলনেত্রী মনে করিয়ে দেন, ‘অন্যের ক্যারেকটার সার্টিফিকেট নেওয়ার আগে, নিজেদের সার্টিফিকেট দেখান। আমাকে এখানে আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? তৃণমূলকে ভয় পেয়ে বাধা দেওয়া হচ্ছে।’ 


তিনি বলেন, ১০ বছর আগে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন গোয়া এসেছিলাম। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করতে এসেছিলাম। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন আরও একবার এসেছিলাম। কোঙ্কন রেলে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস চালুর সময় এসেছিলাম।’


তিনদিনের সফরে গোয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ তাঁর একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে। সকাল ১০টায় গোয়ার দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা ১২টায়, মৎস্যজীবীদের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। দুপুর ১টায়, গোয়ার ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে তৃণমূলনেত্রীর সাংবাদিক বৈঠক। 


এরপর, গোয়ার মাঙ্গুয়েশি মন্দির, মহালসা নারায়ণী মন্দির ও তপোভূমি মন্দিরে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল পৌনে ৬টায়, গোয়ার নাগরিক সমাজের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। ২০২২-এ গোয়ায় বিধানসভা ভোট। গোয়া দখলে আশাবাদী তৃণমূল। অন্যদিকে, গোয়ার বিজেপি সরকার তৃণমূলকে রাজনৈতিক পর্যটক হিসেবে দেখছে।