নয়াদিল্লি: আজ থেকে শুরু হল সংসদের বাদল অধিবেশন। শুরুর আগে বিরোধীদের উদ্দেশে সহযোগিতার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন সকালে, সংসদ ভবন চত্বরে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিরোধীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখে সরকারকে কড়া কড়া প্রশ্ন করুন। কিন্তু, একইসঙ্গে সরকারকে জবাব দেওয়ারও সুযোগ দিন। এতে আমাদের গণতন্ত্র মজবুত হবে। মানুষের আস্থা অটূট হবে এবং উন্নয়নে গতি আসবে।
একইসঙ্গে, করোনা ইস্যুতেও যে সরকার যে কোনও আলোচনায় রাজি, তাও স্পষ্ট করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনা নিয়ে কালই লোকসভায় আলোচনায় রাজি সরকার। সব তথ্যই জানাতে তৈরি।
যদিও, মোদির বক্তব্য যে বিরোধীদের মনে রেখাপাত করেনি, তা পরিষ্কার হয়ে যায় সভা শুরু হতেই। এদিন লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য পেশ করা শুরু করতেই, বিরোধীরা আসন ছেড়ে হই-হট্টগোল শুরু করেন। স্লোগান দেন।
তখন মোদি বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা সভার সম্মানহানি করছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি স্পিকার ওম বিরলার দৃষ্টি আকর্ষণও করেন। অনুরোধ করেন, বিরোধীদের বোঝাতে। কিন্তু, তাতে কাজের কাজ না হওয়ায় এক সময় লোকসভা দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি ঘোষণা করেন স্পিকার।
আজ বাদল অধিবেশনের শুরুতেই পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি আইন বাতিল ও কৃষক আন্দোলন নিয়ে সংসদে ঝড় তোলেন বিরোধীরা। জ্বালানির লাগামছাড়া দাম, করোনার তৃতীয় ঢেউ, ভ্যাকসিনের ঘাটতি, কৃষি আইন বাতিল-সহ একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রকে বিঁধতে মরিয়া বিরোধীরা।
পেট্রোপণ্য ও রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, কৃষি আইন বাতিল, করোনা ভ্যাকসিনের অপ্রতুলতা, আর্থিক বৃদ্ধির হারে হ্রাস, সাংসদ তহবিল চালু ও যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে দুর্বল করে দেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত ৬টি ইস্যুকে সামনে রেখে সংসদের উভয় কক্ষে নোটিস দিয়েছে তৃণমূল।
পাশাপাশি, কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে নোটিস দিয়েছে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি। ফোনে আড়িপাতা-বিতর্কে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে রাজ্যসভায় নোটিস দিয়েছে সিপিআই-ও।
এদিন সকালে পেট্রোল-ডিজেলের অগ্নিমূল্যের অভিনব প্রতিবাদ হিসেবে সাইকেলে চড়ে সংসদে গেলেন তৃণমূল সাংসদরা। বৃষ্টির মধ্যেই দিল্লিতে তৃণমূলের সদর দফতর সাউথ অ্যাভিনিউ থেকে স্লোগান দিতে দিতে প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে সাইকেলে চেপে রওনা দেন ডেরেক ও ব্রায়েন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্পিতা ঘোষরা। বিজয় চকে ব্যারিকেড থাকায় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান তৃণমূল সাংসদরা।
প্রায় একমাস ধরে চলা এবারের বাদল অধিবেশনে আলোচনা হবে ৩১টি বিল নিয়ে। এর মধ্যে থাকছে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির কারখানায় ধর্মঘট বেআইনি ঘোষণা সংক্রান্ত বিতর্কিত বিলও।
এক্ষেত্রে আগেই অধ্যাদেশ জারি করেছিল কেন্দ্র। এবার সেটাই বিল আকারে আনতে চায় মোদি সরকার। সংসদের বাদল অধিবেশন চলবে ১৩ অগাস্ট পর্যন্ত।