গ্বালিয়র: প্রতীক্ষার অবসান। নমিবিয়া থেকে আটটি চিতা নিয়ে ভারতে ফিরল বায়ুসেনার কপ্টার (Cheetahs In India)। মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় অভয়ারণ্যে (Kuno National Park) রাখা হবে চিতাগুলিকে। খাঁচা খুলে চিতাগুলিকে অরণ্যে ছেড়ে দেবেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঘটনাচক্রে শনিবারই প্রধানমন্ত্রীর ৭২তম জন্মদিন। তাই সাত দশক পর ভারতে চিতার পদার্পণ এবং প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনকে (Narendra modi Birthday) সংযোগ হিসেবে দেখছেন বিজেপি সমর্থকদের অনেকে। 


নমিবিয়া থেকে ভারতে এসে পৌঁছল আট চিতা


শনিবার মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে আটটি চিতা নিয়ে অবতরণ করে বায়ুসেনার বিশেষ কার্গো কপ্টার 'চিনুক'। সকাল ৮টা নাগাদ সেখানে অবতরণ করে কপ্টারটি। বেসমারিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া গোটা বিষয়টির তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে কুনো জাতীয় অভয়ারণ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে খাঁচা থেকে তাদের মুক্ত করবেন মোদিই। শাংহাই সম্মেলন থেকে গ্বালিয়র পৌঁছচ্ছেন মোদিও। 



গ্বালিয়রে বায়ুসেনা ঘাঁটি থেকে চিতার ভিডিও এ দিন ট্যুইট করেন জ্যোতিরাদিত্য। তিনি লেখেন, 'কুনোয়, নিজেদের নতুন ঠিকানায় পৌঁছেছে চিতাগুলি'। বিশ্বের বিশিষ্ট চিতা বিশেষজ্ঞ ডঃ লোরি মার্কারও বায়ুসেনার কপ্টারে গ্বালিয়র এসে পৌঁছেছেন। তিনি বলেন, "মৃদু অবশ করে রাখা হয়েছে চিতাগুলিকে। তবে ঘুমপাড়ানি গুলি বা ওষুধ খাওয়ানো হয়নি। তারা দিব্যি আছে " 


বিশ্বের দ্রুতগামী পশু চিতা। নমিবিয়ার আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা চিতা সংরক্ষণ ফান্ড (Cheetah Conservation Fund) তাদের অস্তিত্ব রক্ষায় তৎপর। ভারতে এসে পৌঁছনো আটটি চিতার মধ্যে পাঁচটি স্ত্রী-চিতা। তাদের বয়স দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। পুরুষ চিতা রয়েছে তিনটি। তাদের ব.স সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ বছর।


আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে রইল মোদি সরকারের এই ১০টি জনপ্রিয় প্রকল্প, যা বদলে দিয়েছে দেশবাসীর জীবন


অতীতে ভারতে এশিয়াটিক চিতার বাস ছিল। কিন্তু ১৯৫২ সালে অভ্যন্তরীণ ভাবে চিতার বিলুপ্তির ঘোষণা করা হয়। আন্তঃমহাদেশীয় স্থানান্তরণ প্রকল্পের আওতায় সাত দশক পর ভারতে ফের চিতার আগমন ঘটল। মধ্যপ্রদেশের শেওপুর জেলায় অবস্থিত কুনো অভয়ারণ্য, গ্বালিয়র থেকে দূরত্ব ১৬৫ কিলোমিটার। সবুজ গাছ-গাছালি, ঘাসে ঢাকা উদ্যান এবং শিকারের পর্যাপ্ত জোগান থাকায় কুনো অরণ্যকে ওই আট চিতার নতুন ঠিকানা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। 


কিন্তু পশুপ্রেমীরা এই উদ্যোগের সমালোচনা করছেন। তাঁদের আশঙ্কা, নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হবে এই আট চিতার। উল্টে কুনো অভয়ারণ্যে যে চিতাবাঘগুলি রয়েছে, তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ দেখা দিতে পারে চিতাগুলির।


দীর্ঘ টালমাটাল অবস্থার পর ভারতে এল আট চিতা


আফ্রিকা থেকে ভারতে চিতা আনার পরিকল্পনা ২০০৯ সালেই গৃহীত হয়। কিন্তু নানা কারণে ওই পরিকল্পনা পিছিয়ে যেতে থাকে। ২০২১-এর নভেম্বরে চিতা আনা হবে বলে এর আগে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে প্রক্রিয়া আটকে যায়। গোটা বিশ্বে চিতার সংখ্যা ৭ হাজার। মূলত আফ্রিকার সাভানা অঞ্চলেই তাদের দেখা যায়। তাদের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় রাখা হয়েছে।