নয়াদিল্লি: নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন ইস্যু এবার পৌঁছল সুপ্রিম কোর্টে। রাষ্ট্রপতিকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না করে সংবিধান লঙ্ঘন করেছে সরকার, অভিযোগ তুলে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করছেন আইনজীবী জয়া সুকিন। পাশাপাশি মোদি নন, নতুন সাংসদ ভবন উদ্বোধন করুন রাষ্ট্রপতি। সেই আবেদনও করা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, 'প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করেছেন রাষ্ট্রপতি, অন্যান্য মন্ত্রীদের প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ মতো নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি। রাজ্যপাল, হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদেরও নিয়োগের অধিকার রাষ্ট্রপতির'। মামলায় লোকসভার সচিবালয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রককে পার্টি করা হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্তকে বেআইনি, একতরফা ও খামখেয়ালি বলে উল্লেখ রয়েছে আবেদনে। উল্লেখ্য, আগামী ২৮ মে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক বিরোধীদের: সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে ব্রাত্য রাখার বিরোধিতায় একজোট হয়েছে বিরোধী শিবির। রবিবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। গত বুধবার ২০টি বিরোধী দলের পক্ষ থেকে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, তারা নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কট করবেন। তালিকায় রয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, এনসিপি, সিপিআই, সিপিএম, আম আদমি পার্টি, সমাজবাদী পার্টিসহ মোট ২০টি দল।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, 'সংসদের অধিবেশন ডাকেন রাষ্ট্রপতি, তিনি যৌথ সংসদীয় অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং সভা স্থগিত করেন। সংসদে পাস করা আইন কার্যকর করতে রাষ্ট্রপতির সম্মতি প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে রাষ্ট্রপতিকে ছাড়া সংসদ অচল।' সূত্রের খবর, নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবে শিরোমণি অকালি দল, ওয়াই এস আর কংগ্রেস এবং টিডিপি।
মোদির স্বপ্নের প্রকল্প: খুলতে চলেছে নয়া সংসদ ভবন। ২৮ মে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নের প্রকল্প, সেন্ট্রাল ভিস্তার (Central Vista) অংশ এই নয়া সংসদ ভবন (New Parliament Building)। তাঁর হাতেই উদ্বোধন হবে বলে দিল্লি সূত্রে খবর। ঘটনাচক্রে মে মাসের শেষেই কেন্দ্র মোদি সরকারের নয় বছর পূর্ণ হতে চলেছে। ২০১৪ সালের ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মোদি (Narendra Modi)। নয়া সংসদভবন উদ্বোধনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে তার পূর্তিও।
নয়া সংসদ ভবন তৈরিতে মোট ৯৭০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। চার তলা ভবনে ১ হাজার ২২৪ সাংসদ বসার ব্যবস্থা রয়েছে বলে খবর। এ ছাড়াও, জমকালো কনস্টিটিউশন হল গড়ে তোলা হয়েছে, সেখানে ভারতের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, খাওয়ার জায়গা এবং বিস্তৃত পার্কিং এলাকাও রয়েছে। সংসদের দুই কক্ষ, রাজ্যসভা এবং লোকসভার কর্মীদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে নয়া ইউনিফর্ম। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি (NIFT)-র হাতে তৈরি এই ইউনিফর্মগুলি।
নয়া সংসংদ ভবনের তিনটি প্রবেশদ্বার রয়েছে, জ্ঞানদ্বার, শক্তিদ্বার এবং কর্মদ্বার। এ ছাড়াও সাংসদ, VIP এবং ভিজিটরদের জন্য আলাদা প্রবেশদ্বার রয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে এই নয়া সংসদভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় মোদির হাতে। এ বছর মে মাসেই কেন্দ্রে মোদি সরকারের নয় বছর পূর্ণ হচ্ছে। সেই উপলক্ষে বিজেপি-র তরফে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। সমস্ত লোকসভা কেন্দ্রগুলিতে জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়ে নামছে তারা। শুরুও হয়ে গিয়েছে অনেক জায়গায়।
এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আগামী ৩০ মে বিরাট সভায় অংশ নেবেন তিনি। পর দিন আরও একটি জনসভায় যাবেন। সবমিলিয়ে বিজেপি-র অভিজ্ঞ নেতাদের নিয়ে ৫১টি পৃথক জনসভা রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী নেতা, সাংসদ, বিধায়করা তাতে যোগ দেবেন।