নয়াদিল্লি: পুরাতনকে সরিয়ে নতুনকে জায়গা করে দেওয়াই রীতি। কিন্তু সেই পুরাতনের সঙ্গে যদি জড়িয়ে থাকে ঐতিহ্য, সেখানে জৌলুসের চেয়ে আবেগ কাজ করে অনেক বেশি। তাই নয়া সংসদভবনের উদ্বোধন যত এগিয়ে আসছে (New Parliament Building), এতদিনের সংসদভবনটির (Old Parliament Building) ভবিষ্যৎ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে। সেটি ভেঙে ফেলা হবে কিনা, এমন প্রশ্নও উঠছে। এ নিয়ে পরিষ্কার কিছু জানা না গেলও, সেটিকে সংরক্ষণ করা হবে বলেই খবর দিল্লি সূত্রে।


ভারতের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে সাবেক সংসদভবনটি


ঐতিহাসিক আইন পাস হোক বা জ্বালাময়ী ভাষণ, স্বাধীন সূচনা হোক বা বিবর্তন, ভারতের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে সাবেক সংসদভবনটি। এ যাবৎ দেশ পরিচালনার যাবতীয় সিদ্ধান্ত সেখানেই গৃহীত হয়ে এসেছে সেখানে। কিন্তু কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের দাবি, এতদিন ধরে ব্যবহারের ফলে তার গায়ে সময়ের ছাপ পড়েছে, জায়গায় কুলনো যাচ্ছে না, যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা নেই, প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রেও বাধা আসছে।


তাই সাবেক সংসদভবনের অনতিদূরেই নয়া সংসদভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের আওতায় গোটা সংসদভবন চত্বর, রাজপথের ভোল পাল্টে গিয়েছে। প্রায় ৯০০ কোটি টাকা খরচ পড়েছে শুধুমাত্র নয়া সংসদভবনের নির্মাণেই। তার ঝাঁ চকচকে রূপ ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়। আগামী ২৮ মে সেটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু থাকতে মোদি কেন উদ্বোধন করবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চলছে।


আরও পড়ুন: Sengol in New Parliament Building: স্বাধীনতাপ্রাপ্তির স্মারক, রাজধর্ম পালনের প্রতীক, নয়া সংসদভবনে জায়গা পাচ্ছে ঐতিহাসিক ‘সেঙ্গল’


সেই আবহেই সাবেক সংসদভবনের কী হবে, ঘুরেফিরে উঠে আসছে এই প্রশ্ন। স্বাধীন ভারতের প্রথম সংসদভবন হিসেবে দিল্লির বুকে আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেটি। ব্রিটিশ স্থপতি স্যর এডুইন লুটিয়েন্স এবং হার্বার্ট বেকারের নকশায় নির্মাণে সময় লেগেছিল ছ’বছর। ১৯২৭ সালে নির্মাণকার্য শেষ হয়। সেখানেই স্বাধীন ভারতের প্রথম সংবিধান গৃহীত হয়। ১৯৫৬ সালে আরও দু’টি তল যুক্ত করা হয়। ২০০৬ সালে গড়ে তোলা হয় সংসদভবন মিউজিয়াম, ভারতীয় গণতন্ত্রের বিগত ২৫০০ বছরের ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে।


দর্শনীয় স্থান হিসেবেও খুলে দেওয়া হতে পারে পুরনো সংসদভবনের দরজা


ভারতের ইতিহাসে এই সাবেক সংসদভবনটির গুরুত্ব অস্বীকারের জায়গা নেই।  তাই নয়া সংসদভবনে সবকিছু স্থানান্তরিত করা হলেও, পুরনোটি রেখে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখেই পুরনো সংসদভবনটি সংরক্ষণ করা হবে। ২০২১ সালের মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী জানান, প্রথমে মেরামত করা হবে পুরনো সংসদভবনটির। বিকল্প কাজে ব্যবহার করা হবে সেটিকে। ঠিক কী কাজে ব্যবহার করা হবে, তা নির্দিষ্ট করে জানানো না হলেও, তার একটি অংশকে মিউজিয়ামে পরিণত করা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। দর্শনীয় স্থান হিসেবেও খুলে দেওয়া হতে পারে পুরনো সংসদভবনের দরজা।