উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, রাজীব চৌধুরী, কলকাতা: দেশে গরিবের সংখ্যা কমছে বলে এ বার গরিব কল্যাণ সম্মেলনে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। পাল্টা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়, "কোল ইন্ডিয়া, রেল, বিমা বিক্রি করে দিচ্ছে। লোকজনকে খেতে দিচ্ছে না। আবার বড় বড় কথা বলছে।"


গরিব কল্যাণ সম্মেলনে মোদিকে বলতে শোনা যায়, "ফাইলে সই করার সময় আমি প্রধানমন্ত্রী, বাকি সময় ১৩০ কোটি মানুষের পরিবারের একজন। জনতার প্রধান সেবক।" বিগত আট বছর তিনি দরিদ্রের সেবায় নিয়োজিত, দেশে দারিদ্র কমিয়ে এনেছেন বলেও বলতে শোনা যায় তাঁকে (Poor)।


মোদির দাবিতে বিতর্ক


মোদির এই দাবি নিয়েই শুরু হয়েছ রাজনৈতিক তরজা। কারণ সম্প্রতি প্রকাশ্য পরামর্শদাতা সংস্থা, সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকনমি-র পরিসংখ্যান বলছে, দেশে বেকারত্বের হার এপ্রিল মাসে আরও বেড়ে ৭.৮৩ শতাংশে পৌঁছেছে। সম্প্রতি অক্সফ্যামের বার্ষিক রিপোর্টেও চমকে দেওয়ার মতো তথ্য উঠে এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, করোনাকালে ভারতে দরিদ্র আরও দরিদ্র হয়েছে। আর ধনীরা আরও ফুলে ফেঁপে উঠেছে। 


অক্সফ্যামের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১-এ ভারতের ৮৪ শতাংশ পরিবারের আয় যখন কমেছে, ঠিক সেই সময়েই ভারতে ধনকুবেরের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন আরও ৪০ জন, যার ফলে ভারতে ধনকুবেরের সংখ্যা ১০২ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪২।


আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: দিলীপ-মন্তব্যে ক্ষুব্ধ বিজেপি, মুখ খোলায় নিষেধাজ্ঞা দলের


যদিও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, "কোনও গরিব মানুষ যেন বঞ্চিত না হয়, সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে, দেশে আজ গরিবের সংখ্যা কমছে।" তাই মোদিকে একহাত নিতে শোনা গিয়েছে মমতাকেও। তিনি বলেন, "দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে, গরীব মানুষদের মেরে ফেলেছ। কোল ইন্ডিয়া, রেল, বীমা বিক্রি করে দিচ্ছ। লোকজনকে খেতে দিচ্ছ না, আর আজ বড় বড় কথা।"


রেল সূত্রে খব, গত ৬ বছর ধরে ৭২ হাজারেরও বেশি পদ অবলুপ্ত হয়েছে ভারতীয় রেলে। সিএমআইই-র সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশজুড়ে ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কাজের যোগ্য এবং কাজের বাজারে পা রাখা মানুষের অনুপাত ৪৬% থেকে নেমে এসেছে ৪০ শতাংশে। কাজের খোঁজ বন্ধ করে দেওয়া মানুষের সংখ্যা ৪৫ কোটির বেশি। গত কয়েক বছরে ২.১ কোটি মহিলা কাজের বাজার থেকে সরে গিয়েছেন।


মোদিকে কটাক্ষ মমতার

অন্য দিকে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান এবং প্রকল্প রূপায়ণ মন্ত্রকের ‘বার্ষিক শিল্প সমীক্ষা’-র প্রাথমিক রিপোর্টে ২০১৯-২০ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে মোট কারখানার সংখ্যা মাত্র ৯,৬৫০টি। এই সব কারখানায় ৫ লক্ষ ৮০ হাজারের মতো কর্মী কাজ করেন।অথচ সেখানে কারখানার সংখ্যার নিরিখে প্রথম সারিতে থাকা তামিলনাড়ুতে কারখানা ৩৮ হাজারের বেশি। ২২ লক্ষের বেশি মানুষ ওই সব কারখানায় কাজ করেন। গুজরাত, মহারাষ্ট্রেও কারখানার সংখ্যা যথাক্রমে ২৮ হাজার, ২৫ হাজারের বেশি। ১৪ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষের বেশি জন ওই রাজ্যগুলির কারখানায় কাজ করেন।