নয়াদিল্লি: কোভিডের (Coronavirus)কোনও কোনও টিকা নিলে নাকি রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বাড়ে ! এমন আশঙ্কায় ভুগছিলেন অনেকেই। তবে সম্প্রতি ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দাবি, কোভিড - ১৯ এ আক্রান্ত হলে বরং বেশিই বাড়ে রক্ত জমা বাঁধার প্রবণতা। টিকা নিলে শিরা বা ধমনীতে ব্লাড ক্লট বেঁধে বিপত্তির আশঙ্কায় যারা ভুগছেন, এই রিসার্চ পাবলিকেশন নিশ্চিত ভাবেই তাঁদের কাছে স্বস্তি। গবেষণা বলছে, ফাইজার বা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন নিয়ে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা যতটা রয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি আশঙ্কা রয়েছে করোনায় আক্রান্ত হলে।



অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি সমীক্ষা চালান এই নিয়ে। খতিয়ে দেখা হয়, Oxford-AstraZeneca, Pfizer-BioNTech এই ভ্যাকসিনগুলি নেওয়ার পর  শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বেড়ে যায় কিনা। সমীক্ষা চালানো হয়  UK র ২৯ মিলিয়ন জনসংখ্যার উপর। তুলনামূলক বিচার করে দেখা হয়, কোভিড১- আক্রান্ত হলে কি রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা বেশি বাড়ে ? নাকি ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজটি নেওয়ার পর ? ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিন নিলে কারও কারও শরীরে রক্ত ক্লট করার প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু তা বলে কি ভ্যাকসিন নেওয় যাবে না ? 


করোনার পর ঝাপসা দেখা ! ভাবাচ্ছে রেটিনায় রক্ত জমাট বেঁধে দৃষ্টিহীন হওয়ার ঘটনা


Oxford-AstraZeneca ভ্যাকসিনের ভারতীয় ভার্সন হল কোভিশিল্ড। এটি নেওয়ার পর কারও কারণ রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু তার থেকেও বিপদ বেশি, যদি করোনা সংক্রমিত হন কেউ। আর সেই ঝুঁকি অনেক লম্বা সময় অবধি থাকে। বলছেন, গবেষণাপত্রটির লেখিকা, Julia Hippisley-Cox, ( professor at the University of Oxford) 


আমাদের শরীরে কোথাও কেটে ছিঁড়ে গেলে রক্ত একটা সময়ের পর জমাট বেঁধে যায়। এই রক্ত জমাট বাঁধার পিছনে থাকে রক্ত তঞ্চক উপকরণ গুলি । যার মধ্যে প্লেটলেট (platelets) বা অনুচক্রিকা অন্যতম। প্লেটলেট রক্তের মধ্যে স্থিত আরও কতগুলি সহযোগী উপকরণ  নিয়ে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে । করোনায় আক্রান্ত হলে অনেকের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বেড়ে যায়। অর্থাৎ শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন থ্রম্বোসিস দেখা যায়, ঠিক তেমনই হতে পারে চোখে। ঠিক সেই কারণেই করোনা হলে রোগীদের d-dimer পরীক্ষা করতে বলা হয়,  যার মাধ্যমে বোঝা যায় শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা কতটা । তা যদি অস্বাভাবিক হয় তাহলে মাথায় রাখতে হবে রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ খাওয়ার বিষয়টি । যদিও এর কোনওটিই রোগী নিজে নিজে করতে পারবেন না, করা উচিতও নয় । চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান এবং কোনও পরীক্ষায় যদি অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে তাহলে প্রয়োজন অনুসারে তার চিকিৎসা করাতে হবে।