চণ্ডীগড়: সিঁদুরে মেঘ দেখা গিয়েছিল ঢের আগেই।  সতর্কবার্তা ভেসে এসেছিল বার বার। তা-ও পাঞ্জাবে (Punjab Assembly Poll Result 2022) মুখরক্ষা করতে পারল না কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনায় আক্ষরিক অর্থেই মুখ থুবড়ে পড়েছে তারা। ২০১৭ সালে যেখানে ৭৭টি আসনে জিতে রাজ্যে সরকার গড়েছিল তারা। এ বার মাত্র ১৩টি আসন ঝুলিতে পুরতে পেরেছে তারা। বরং সেই তুলনায় পাঞ্জাবের রাজনীতিতে আনকোরা, আম আদমি পার্টি (Aam Aadmi Party/AAP) ৮৯টি আসন ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে। শিরোমণি অকালি দল পেয়েছে ৯টি আসন। বিজেপি ৫টি আসন পেয়েছে। অন্যান্যদের ঝুলিতে গিয়েছে ১টি আসন। ১১৭ আসনের পাঞ্জাব বিধানসভায় সরকার গড়ার ম্যাজিক সংখ্যা ৫৯। তাই সেখানে আপ সরকার প্রতিষ্ঠা হতে চলেছে।


এর আগে ২০১৭ সালেও পাঞ্জাবে ভোটের ময়দানে নেমেছিল আপ। সে বার ২০ আসনেই থামতে হয়েছিল তাদের। নতুন দল হিসেবে এই আসনসংখ্যা যে মোটেই ফেলনা নয়, সে কথা তখনই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তার পর থেকে দিল্লিতে মসনদ সামলানোর পাশাপাশি পাঞ্জাবেও রাজনৈতিক সক্রিয়তা লাগাতার বজায় রেখে এসেছে তারা। এই ধারাবাহিকতার সুফলই তারা ঘরে তুলতে পারল বলে মনে করা হচ্ছে। ভগবন্ত সিংহ মান পাঞ্জাবে আপের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। ধুরি থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। শুরু থেকেই নিজের কেন্দ্রে এগিয়েছিলেন। 


এ দিন ভোটের ফলাফল যখন আপের সরকারে আসা নিশ্চিত করছে, সেই সময় বিনয়ের সুরই ধরা পড়ে ভগবন্তের (Bhagwant Singh Mann) গলায়। জানান, মানুষের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছেন তিনি। এই বিপুল জনসমর্থনের মর্যাদা রাখার চেষ্টা করবেন। মাথা ঘুরে যেতে দেবেন না। 


আরও পড়ুন: Goa Election Results 2022: পানাজিতে ৮০০ ভোটে পরাজিত প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ছেলে


তবে আপের এই সাফল্যের পিছনে তাদের নির্বাচনী কৌশলই কাজে লেগেছে বলে মনে করছেন অনেকে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বাছাই নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে যখন প্রকাশ্যেই খেয়োখেয়ি চলছে, সেই সময় মুখ্যমন্ত্রপী পদপ্রার্থী বাছতেও জনমতের সাহায্য নেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। টেলিভোটের মাধ্যমে পাঞ্জাববাসীর কাছে পছন্দের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম জানতে চান কেজরিওয়াল। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দ জানান সাধারণ মানুষ। তাতে ভগবন্তের সমর্থনে ৯৩ শতাংশ ভোট পড়ে। 


এ ছাড়াও, পড়শি রাজ্য দিল্লিতে শিক্ষা থেকে, পরিবহণ, মহল্লা ক্লিনিক, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ-সহ একাধিক জনমোহিনী প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঘটিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার। তাদের সেই ভাবমূর্তিও পাঞ্জাবের মানুষকে আকর্ষিত করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে পাঞ্জাবের এই জয়, আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতিতে কেজরিওয়ালের ভিত আরও মজবুত করবে বলে আশাবাদী দলের নেতা-নেত্রীরাও। ভবিষ্যতে কেজরিওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান বলে ইতিমধ্যেই দাবি তুলতে শুরু করেছে তারা।