চণ্ডীগড়: মাথাপিছু ২৫ কোটি টাকার বিনিময়ে বিধায়ক কেনার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তার জন্য শীঘ্রই পঞ্জাব বিধানসভায় আস্থাভোটের দাবি তুলেছেন নিজেই (Punjab Government)। সেই আবহেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মানকে নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে (Bhagwant Singh Mann)। মত্ত অবস্থায় থাকায়, তাঁকে জার্মানিতে একটি বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আম আদমি পার্টি (Aam Aadmi Party) যদিও ভগবন্তের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ খণ্ডন করেছে।
জার্মানিতে মত্ত অবস্থায় বিমানে ওঠার অভিযোগ ভগবন্তের বিরুদ্ধে
এর আগেও একাধিক বার বিতর্কে জড়িয়েছেন ভগবন্ত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদে থেকে মত্ত অবস্থায় বিমানে ওঠার মতো গুরুতর অভিযোগ আগে কখনও ওঠেনি তাঁর বিরুদ্ধে। রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে ১১ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জার্মানি সফরে ছিলেন ভগবন্ত। ১৮ তারিখই বিমানে উঠে দেশে ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু শেষ মুহূর্তে পঞ্জাব সরকার জানায়, সোমবার ফিরবেন ভগবন্ত।
সরকারি সূত্রে জানা যায়, ব্যগপত্র নিয়ে ফ্র্যাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে পৌঁছেও শেষ মুহূর্তে বিমান না ধরার সিদ্ধান্ত নেন ভগবন্ত। জানান, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। তার পরই ভারতীয় কনস্যুলেটের তরফে ফের গাড়ি পাঠিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে আম আদমি পার্টির জনসংযোগ বিভাগের ডিরেক্টর চন্ত্রসূত দোগরা বলেন, ‘‘ ভগবন্ত মান অসুস্থ বোধ করছিলেন। তাই ফ্র্যাঙ্কফুর্ট বিমান ধরতে পারেননি। তবে ফিরছেন তিনি।’’
কিন্তু আপ সরকারের এই দাবি খারিজ করে, মারাত্মক অভিযোগ তোলে পঞ্জাবের দুই বিরোধী দল, শিরমণি অকালি দল এবং কংগ্রেস। তারা দাবি করে, অতিরিক্ত মদ্যপানের পর, মত্ত অবস্থায় বিমানে লুফতানসার বিমানে ওঠেন ভগবন্ত। সেখানে অন্য যাত্রীদের বিব্রত করতে থাকেন তিনি। তা নিয়ে হট্টগোল শুরু হলে, বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় ভগবন্তকে। গোটা ঝামেলার জেরে বিমানটিও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে চার ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে বলে অভিযোগ করে অকালি দল এবং কংগ্রেস।
অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিংহ বাদল, তাঁর স্ত্রী হরসিমরত কউর এবং কংগ্রেস পরিষদীয় দলের প্রধান প্রতাপ সিংহ বাজওয়া দাবি করেন, মত্ত অবস্থায় সকলকে বিব্রত করার জন্য যে ব্যক্তিকে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়, তিনিই ভগবন্তই। এই ঘটনার পর ভগবন্তের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত বলেও দাবি তোলেন তাঁরা। ভগবন্তের আচরণ নিয়ে ওই বিমানের একাধিক যাত্রী মুখ খুলেছেন বলেও জানান তাঁরা। এ নিয়ে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার হস্তক্ষেপও দাবি করেন বাদল।
ভগবন্তের ইস্তফার দাবি তুলছেন বিরোধীরা
এর পরই সমালোচনার মোকাবিলা করতে নেমে পড়ে আম আদমি পার্টি। দলের নেতা মলবিন্দর সিংহ কাঙ বলেন, ‘‘বিরোধীদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। লাগাতার মিথ্যে রটিয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। এতে আসেল রাজ্যেরই বদনাম হচ্ছে।’’ লুফতানসার তরফেও পরে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় যে, কিছু সমস্যার জন্য এক বিমান থেকে অন্য বিমানে তুলতে হয় যাত্রীদের। তাতেই বিমান ছাড়তে দেরি হয়। কিন্তু তাতেও আক্রমণ শানানো থেকে পিছু হটছেন না বিরোধীরা। গোটা বিত্রকে ভগবন্তের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।