নয়াদিল্লি ও চণ্ডীগড়: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর অধিকার ক্ষেত্রের পরিধি বাড়িয়েছে। এখন থেকে বিএসএফ আধিকারিকরা পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাব, অসমে সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত পর্যন্ত গ্রেফতারি, তল্লাশি ও বাজেয়াপ্ত করতে পারবেন। আগেও বিএসএফ আধিকারিকরা তা করতে পারতেন। কিন্তু এই তিন রাজ্যে তাঁদের এই ক্ষমতার পরিধি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত ছিল। এখন থেকে সেই সীমা বাড়ানো হল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর দফতরের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। পাক সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্য পঞ্জাব ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী ট্যুইট করে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া ৫০ কিলোমিটার পরিধির মধ্যে বিএসএফ-কে অতিরিক্ত অধিকার দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের এই এক তরফা সিদ্ধান্তের কড়া নিন্দা করছি। এটা সম্পূর্ণভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর সরাসরি আক্রমণ। আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আর্জি জানাচ্ছি।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিএসএফ এখন থেকে সীমান্ত থেকে ৫০ কিমি এলাকায় মাদক চালান রুখতে তল্লাশি ও বাজেয়াপ্তকরণের কাজ চালাতে পারবে। এর আগে এই সীমা ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে সীমিত ছিল। যদিও বিএসএফ ১০০ মিটার পরিসরেই এই কাজ করত। বিএসএফের এই অধিকার ক্ষেত্রে বাড়ানো নিয়ে পঞ্জাবের কংগ্রেস নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন। এই সিদ্ধান্ত রাজ্যে অধিকার সীমায় কেন্দ্রে হস্তক্ষেপ হিসেবে অভিযোগ করা হচ্ছে।
কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও সাংসদ মণীষ তিওয়ারি কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্যুইট করে বলেছেন, এমনটা হলে পঞ্জাবের প্রায় অর্ধেকই বিএসফের অধিকার ক্ষেত্রের মধ্যে চলে আসবে। চরণজিৎ সিংহর এর বিরোধিতা করা উচিত।
পঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুখজিন্দর সিংহ রন্ধওয়া বলেছেন, কেন্দ্র অমৃতসর বাটালা ও অমৃতসর পর্যন্ত এলাকা বিএসএফকে দিয়ে দিয়েছে। এটা যাতে অনুমোদিত না হয়, তার আবেদন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে জানাচ্ছি। বিএসএফ ড্রোনের ওপর নজর দিক। কেন্দ্র সরকার কী করতে চাইছে, তা বোধগম্য হচ্ছে না। পঞ্জাব পুলিশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়েছে, তারা মাদকের বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না? পঞ্জাবিদের সন্দেহের চোখে দেখছে কেন্দ্র? এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর সরাসরি আঘাত।
সুখজিন্দর জানিয়েছেন, তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছেন। দুজনের সঙ্গেই সাক্ষাতের সময় চাইবেন তিনি। বর্ডার সিল করতে হবে, নো ম্যানস ল্যান্ডে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নাকি পঞ্জাব পুলিশ পরিসীমার মধ্যে এসে তারা তদন্ত করবে। গুজরাতে বিএসএফের এলাকা কমানো হয়েছে। সেখানে জায়গা ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কিন্তু পঞ্জাবে সীমান্তে বসতি, শহর রয়েছে। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে কেন্দ্র ব্যবস্থা নিয়ে চায়, সেজন্য এই ছলনার আশ্রয় কেন্দ্র নিয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।