চণ্ডীগড়: পঞ্জাব রাজ্য রাজনীতিতে ফের চমক। সবাইকে অবাক করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নভজ্যোতি সিংহ সিধু। কংগ্রেস দলনেত্রী সনিয়া গাঁধীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন সিধু। সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে নভজোৎ সিংহ সিধু জানালেন,  ‘প্রদেশ সভাপতির পদ ছাড়লেও কংগ্রেসেই আছি। পাঞ্জাবের উন্নয়নের জন্য কোনও সমঝোতা করতে পারব না।’


আজই পঞ্জাবে নতুন মন্ত্রীদের মধ্যে দফতর বন্টন হয়েছে।এরই কয়েক ঘণ্টা পরেই সনিয়ার কাছে সিধুর এই ইস্তফা দেওয়া অত্যন্ত তাৎপর্য্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।


সনিয়াকে লেখা চিঠিতে সিধু বলেছেন, সমঝোতার মধ্যেই চরিত্রের অবনমনের বীজ নিহিত থাকে। পঞ্জাবের ভবিষ্যত ও রাজ্যের কল্যাণের কর্মসূচি নিয়ে কোনওভাবেই আপস করতে পারব না। সেজন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছি। তবে আমি কংগ্রেস কর্মী হিসেবেই কাজ করব।


এরইমধ্যে জল্পনা ছড়িয়েছে যে, পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ খুব শীঘ্রই দিল্লি যাচ্ছেন। বিভিন্ন সূত্রে জল্পনা চলছে যে, তিনি দিল্লিতে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে দেখা করতে পারেন।  গত ১৮ সেপ্টেম্বর পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন অমরিন্দর সিংহ। তারপর থেকে এটি হতে চলেছে তাঁর দ্বিতীয়বার দিল্লি সফর।


অমরিন্দর সিংয়ের ইস্তফার পর পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন চরণজিৎ সিংহ চান্নি।এই প্রথম কোনও দলিত মুখ বসেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে। অমরিন্দরের জায়গায় ভোটমুখী পঞ্জাবে কংগ্রেসের মুখ হবেন কে? এটাই ছিল সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। নভজ্যোৎ সিংহ সিধু,সুনীল জাখর,অম্বিকা সোনি, প্রতাপ সিংহ বাজওয়া থেকে সুখজিন্দর সিংহ রণধাওয়া  - একাধিক নাম নিয়ে চলছিল জল্পনা। শেষপর্যন্ত  চণ্ডীগড়ে কংগ্রেস বিধায়করা চরণজিৎ সিংহ চান্নিকেই পরিষদীয় নেতা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। ৫৮ বছরের চরণজিৎ সিংহ চান্নি চমকৌর কেন্দ্রের ৩ বারের বিধায়ক।অমরিন্দর মন্ত্রিসভার কারিগরি শিক্ষা দফতরের দায়িত্বও ছিল তাঁর কাঁছে।একসময় পঞ্জাব বিধানসভার বিরোধী দলনেতাও ছিলেন চান্নি।


উল্লেখ্য, রাজ্য রাজনীতিতে টানাপোড়েনের মধ্যে বিস্তর আলোচনার মাত্র মাস দুয়েক আগেই সিধুকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। অমরিন্দর সিংহর সঙ্গে সিধুর তীব্র সংঘাতের মধ্যে সিধুর এই নিযুক্তির পর পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিতে হয়েছিল ক্যাপ্টেনকে। 


এরপর এদিন সিধুর ইস্তফার কারণ নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে।সূত্রের খবর, অসন্তোষের কারনেই সিধু ইস্তফা দিয়েছেন।সূত্রের খবর, রাজ্যের মন্ত্রীদের নাম চূড়ান্ত করার সময় রাহুল গাঁধী চরণজিৎ সিংহ চান্নির সঙ্গেই আলোচনা করেছিলেন। এই আলোচনায় সিধুকে সামিল করা হয়নি। প্রথম বৈঠকে তাঁকে ডাকা হলেও যখন রাহুল সিমলা থেকে ফিরে আসেন, তারপর যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে সিধুকে ডাকা হয়নি। এছাড়াও বিভিন্ন পদে চান্নি যে নামগুলি ঠিক করছেন, তাতেও সিধুর সঙ্গে আলোচনা হয়নি বলেও সূত্রের খবর।