মুম্বই: মহারাষ্ট্রের গদি হাতছাড়া হয়েছে। টানাপোড়েন চলছে দলের কর্তৃত্ব নিয়েও। তার মধ্যেই ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ (Har Ghar Tiranga) কর্মসূচি নিয়ে নাম না করে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray)। পতাকা তুলেই দেশপ্রমী হওয়া যায় না বলে মন্তব্য করলেন তিনি। 


‘হর ঘর তিরঙ্গা’ নিয়ে কটাক্ষ উদ্ধব ঠাকরের


স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তার আওতায় দেশের সরকারি, বেসরকারি, রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা, প্রতিষ্ঠান-সহ দেশের ২০ কোটি ভবন এবং বাড়ির মাথায় পতাকা তোলার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ফেসবুক, ট্যুইটারের মতো সোশ্যল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতেও দেশের নাগরিকদের প্রোফাইল পিকচার পাল্টে নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। 


শনিবার সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কেন্দ্রকে একহাত নিলেন উদ্ধব। শনিবার বাল ঠাকরে প্রতিষ্ঠিত ‘মার্মিক’ ব্যঙ্গচিত্র (Cartoon) পত্রিকার ৬২ বছর পূর্তি ছিল। সেই উপলক্ষে ভিডিও বার্তা দেন উদ্ধব। তাতেই ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান।


এ দিন উদ্ধব বলেন, ‘‘শুধু পতাকা তুলেই দেশপ্রেমী হওয়া যায় না। স্বাধীনতার অমৃত উৎসব পালিত হচ্ছে দেশে। কিন্তু বিগত ৭৫ বছরে দেশে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব কোথায় এসে ঠেকেছে, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা প্রয়োজন।’’


আরও পড়ুন: US-India Relations: লুকিয়ে রাশিয়ার তেল বইছে ভারত! অভিযোগ তুলল আমেরিকা, বাড়ছে উদ্বেগ


ব্যঙ্গচিত্র শিল্পীদেরই দেশকে দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির পথ দেখাতে হবে বলেও এ দিন মন্তব্য করেন উদ্ধব। তিনি বলেন, ‘দেশে রাজতন্ত্র চালানো সরকার আজকাল ঘের ঘরে পতাকা লাগাতে বলছে। একজন একটি ছবি দেখাল। তাতে এক বৃদ্ধ মানুষকে বলতে শুনলাম যে, তাঁর হাতে পতাকা রয়েছে, কিন্তু সেটি লাগানোর বাড়ি নেই।’’


কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে এ দিন উদ্ধব আরও বলেন, ‘‘অরুণাচলপ্রদেশে এখনও চিন  অনুপ্রবেশ ঘটে চলেছে। ঘরে ঘরে তেরঙ্গা তুললেই তারা ফিরে যাবে না। তেরঙ্গা মনে থাকলেই হল।’’


নাম না করে কাকে নিশানা করলেন উদ্ধব!


দেশজুড়ে স্বানতীর অমৃত মহোৎসব পালনে যখন উদ্যত কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, সেই সময় তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীকে বঞ্চিত কারর অভিযোগ তোলেন উদ্ধব। তিনি বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে তেরঙ্গার ছবি লাগানো অবশ্যই আনন্দের বিষয়। কিন্তু ডিপি-তে জাতীয় পতাকা ঝোলানো, আর অন্য দিকে বাড়িঘর, আপনজনদের ছেডে় সীমান্তে যাঁরা দেশকে পাহারা দিচ্ছেন, তাঁদের বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সেনাবাহিনীতে সৈনিকই যদি না থাকেন, কাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেবেন? দেশের মানুষকে চাকরি দেওয়ার, বেতন দেওয়ার টাকা নেই, কিন্তু রাজ্যের সরকার উৎখাত করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট টাকা আছে।’’