নয়াদিল্লি : কেন্দ্রের ভ্যাকসিন নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি রাজধানীতে ভ্যাকসিন-পোস্টার বিতর্কে আরও চাঁচাছোলা আক্রমণে রাহুল গাঁধী। কংগ্রেসের নেতা সোশ্যাল মাধ্যমে সরকারের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জের সুরে লিখেছেন, 'আমাকেও গ্রেফতার করুন'। সঙ্গে জুড়েছেন সেই পোস্টার, যা নিয়ে গতকাল থেকে দিল্লিতে রাজনৈতিক বিতর্কের পারদ চড়েছে। যেখানে লেখা, 'মোদিজি হামারে বাচ্চো কা ভ্যাকসিন কিঁউ বিদেশ ভেজ দিয়া?' অর্থাৎ, মোদিজি কেন আমাদের দেশের বাচ্চাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার বদলে তা বিদেশে পাঠিয়ে দিলেন?


ভ্যাকসিন-ভোগান্তি ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়িয়ে কংগ্রেস পার্টির তরফেও তাদের ট্যুইটারের প্রোফাইল পিকচারে স্থান বসানো হয়েছে এই পোস্টারকে। রাহুল গাঁদী নিজেও তাঁর ট্যুইটারের প্রোফাইল পিকচার করেছেন পোস্টারটিকে। আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকেও খোঁচা দেওয়া হয়েছে, একটা পোস্টার এভাবে একটা সরকারে ত্রাহি ত্রাহি রব তুলে দিতে পারে, এমনটা আগে কখনও দেখেছেন।


শনিবার থেকে হঠাৎই রাজধানীর রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ভ্যাকসিন নিয়ে পোস্টারটি। দিল্লির একাধিক জায়গাতে এই পোস্টার পড়ার পরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্ত দিল্লি পুলিশ কড়া পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। রাজধানী জুড়ে মোট ২৫ জন গ্রেফতার করা হয়। মোট ২৫টি এফআইআর দাখিল করা হয় পোস্টারটি ঘিরে। আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন, সরকারি সম্পত্তি নষ্টের দায়েই এই এফআইআর ও গ্রেফতারি।



কিন্তু গোটা ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেই সুর চড়ায় বিরোধীরা। কংগ্রেস, আপের দাবি, একে দেশের করোনা পরিস্থিতি সামলাতে মোদি সরকার ব্যর্থ, নিজেদের দেশের লোককে ভ্যাকসিন জোগাতেও ব্যর্থ, তার ওপর সমালোচিত হলে কন্ঠরোধ করতে উঠে-পড়ে লেগেছে সরকার।


গত ১ মে থেকে দেশের ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সিদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা প্রথমে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। পরে ভ্যাকসিনের আকালের জেরে বিভিন্ন  রাজ্যের হাতে তারা ছেড়ে দেয় ভ্যাকসিন কেনা ও নির্দিষ্ট রাজ্যবাসীকে টিকাকরণ করানোর প্রক্রিয়াটি। প্রবল করোনা ঢেউয়ের মাঝে কেন দেশের মানুষের কথা না ভেবে ভারত সরকার আগে বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহে ব্যস্ত ছিল এতদিন সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা।


ওয়াকিবহাল মহলের মত, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে দেশে চলতে থাকা ভ্যাকসিন-ভোগান্তি নিয়ে কোনঠাসা করার রাজনৈতিক সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না বিরোধী শিবিরগুলি।