নয়া দিল্লি : এবার থেকে ২৪ জানুয়ারির পরিবর্তে প্রতি বছর ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠান। যাতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সেই লক্ষ্যে। এর আগে নরেন্দ্র মোদি সরকার সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিনটিকে পরাক্রম দিবস হিসেবে পালন শুরু করে।
কেন্দ্র সারা দেশে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর সঙ্গে যুক্ত সাইটগুলিকে প্রচার করার পরিকল্পনা তৈরি করেছে ৷ গত বছর, অক্টোবরে, সংবাদ সংস্থা পিটিআই রিপোর্ট করেছিল যে, পর্যটন মন্ত্রক আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের বার্ষিকী, ২১ অক্টোবর, ১৯৪৩-এ নেতাজি কর্তৃক ঘোষিত সরকার গঠনের বার্ষিকী উদযাপনের জন্য কিউরেটেড ট্যুরের পরিকল্পনা করছে।
প্রসঙ্গত, পরাক্রম দিবস (Parakram Diwas) নাকি দেশনায়ক দিবস! নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন ঠিক কোন নামে হবে, তা নিয়ে এর আগে চরমে উঠেছিল রাজনৈতিক তরজা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজির জন্মজয়ন্তীকে পালন করে পরাক্রম দিবস নামে। উল্টোদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সরকার নেতাজি জন্মজয়ন্তী পালন করে দেশনায়ক দিবস হিসেবে।
আরও পড়ুন ; ‘পরাক্রম-র মানে কী! নেতাজির জন্মদিন কেন দেশনায়ক দিবস হবে না’ সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এনিয়ে চলতে থাকা বিতর্কের মাঝেই কেন্দ্রকে কড়া সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘পরাক্রম দিবস, কেয়া হে পরাক্রম! হোয়াট ইজ দ্য মিনিং। আমাকে পছন্দ নাই হতে পারে রাজনৈতিকভাবে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যদি আমাকে একটু জিজ্ঞেস করত, বা নিদেনপক্ষে সুগত বসুর কাছে পরামর্শ চাইতে পারত কোন শব্দটা ব্যবহার করা উচিত। নেতাজি আমাদের আবেগ, তাঁর সম্পর্কে কিছু ঠিক করতে ইতিহাসটা পর্যালোচনা করে নেওয়া জরুরি।’
তারপর আক্রমণের সুর আরও চড়িয়ে নাম না করে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোড়েন, ‘আপনি ভাল গুজরাটি শব্দ জানেন, আমি জানি না। কয়েকটা শব্দ জানি, পাঞ্জাবিতে বলতে বললেও কয়েকটা শব্দই বলতে পারব। কিন্তু আমি তো আর ভালোভাবে সেটা বলতে পারব না। কিন্তু বাংলার যে মানুষকে নিয়ে গোটা জাতির গর্ব। স্বর্ণখচিত ইতিহাস, তাঁকে ঘিরে কেন এই পরাক্রম শব্দ, কে নামটা দিল?’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতাজিকে দেওয়া দেশনায়ক তকমার জন্যই এই নামে জন্মদিবস পালন বলেও জানান তৃণমূল নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’যাক পরাক্রম নাম দেওয়া হলেও আমরা দেশনায়ক দিবস হিসেবেই দিনটা পালন করেছি। তার নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। ছাত্র-যুবরা মনে রেখো নেতাজিকে সর্বপ্রথম দেশনায়ক তকমা দিয়েছিলেন খোদ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তাই আমরা দেশনায়ক দিবস হিসেবেই দিনটা পালন করব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষার হাত ধরে আমরা রবীন্দ্রনাথ-নেতাজিকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’