কলকাতা:  পরাক্রম দিবস নাকি দেশনায়ক দিবস! নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন ঠিক কোন নামে হবে, তা নিয়ে চরমে উঠল রাজনৈতিক তরজা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজির জন্মজয়ন্তীকে পালন করছে পরাক্রম দিবস নামে, উল্টোদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সরকার নেতাজি জন্মজয়ন্তী পালন করছে দেশনায়ক দিবস হিসেবে। যে নিয়ে চলতে থাকা বিতর্কের মাঝেই রেড রোডে নেতাজি মূর্তির পাদদেশের বক্তব্য রাখার বিষয়টা নিয়ে কেন্দ্রকে কড়া সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সভামঞ্চ থেকে বলেছেন, ‘পরাক্রম দিবস, কেয়া হে পরাক্রম! হোয়াট ইজ দ্য মিনিং। আমাকে পছন্দ নাই হতে পারে রাজনৈতিকভাবে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যদি আমাকে একটু জিজ্ঞেস করত, বা নিদেনপক্ষে সুগত বসুর কাছে পরামর্শ চাইতে পারত কোন শব্দটা ব্যবহার করা উচিত। নেতাজি আমাদের আবেগ, তাঁর সম্পর্কে কিছু ঠিক করতে ইতিহাসটা পর্যালোচনা করে নেওয়া জরুরী।’

তারপর আক্রমণের সুর আরও চড়িয়ে নাম না করে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোড়েন, ‘আপনি ভালো গুজরাটি শব্দ জানেন, আমি জানি না। কয়েকটা শব্দ জানি, পাঞ্জাবীতে বলতে বললেও কয়েকটা শব্দই বলতে পারবো। কিন্তু আমি তো আর ভালোভাবে সেটা বলতে পারব না। কিন্তু বাংলার যে মানুষকে নিয়ে গোটা জাতির গর্ব। স্বর্ণখচিত ইতিহাস, তাঁকে ঘিরে কেন এই পরাক্রম শব্দ, কে নামটা দিল?’

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতাজিকে দেওয়া দেশনায়ক তকমার জন্যই এই নামে জন্মদিবস পালন বলেও জানান তৃণমূল নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’যাক পরাক্রম নাম দেওয়া হলেও আমরা দেশনায়ক দিবস হিসেবেই দিনটা পালন করেছি। তার নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। ছাত্র-যুবরা মনে রেখো নেতাজিকে সর্বপ্রথম দেশনায়ক তকমা দিয়েছিলেন খোদ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তাই আমরা দেশনায়ক দিবস হিসেবেই দিনটা পালন করব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষার হাত ধরে আমরা রবীন্দ্রনাথ-নেতাজিকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’

ভোটমুখী বঙ্গে ক্রমশ বঙ্গ আবেগ ও বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে চড়ছে রাজনৈতিক তরজা, যে তালিকায় পরাক্রম-দেশনায়ক বিবাদকে নতুন সংযোজন হিসেবেই দেখছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল।