নয়াদিল্লি: অযোধ্যার ছাড়িয়ে মন্দির-মসজিদ বিতর্ক রোজই ইন্ধন পাচ্ছে। বারাণসীর জ্ঞানব্যাপী মসজিদ থেকে, মথুরা, কুতুব মিনার এমনকি তাজমহল নিয়েও চলছে চাপানউতোর। সেই আবহে মুখ খুললেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘ (RSS) প্রধান মোহন ভগবত (Mohan Bhagwat)। তিনি জানিয়েছেন, প্রত্যেক মসজিদে শিবলিঙ্গ খুঁজে বেড়ানো অর্থহীন। জ্ঞানব্যাপী মসজিদে ভিডিও রেকর্ডিং বিতর্কেও মীমাংসার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছনোর বার্তা দিলেন তিনি।
যা বললেন ভগবত
উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে জ্ঞানব্যাপী মন্দিরে শিবলিঙ্গের দাবি ঘিরে এই মুহূর্তে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। আদালতেও সেই নিয়ে বিভাজন স্পষ্ট। কারণ পৃথক আভেদন জমা দিয়েছে হিন্দু এবং মুসলিম পক্ষ। হিন্দু পক্ষের দাবি মসজিদের অন্দরে শিবলিঙ্গ পাওয়া গিয়েছে। মুসলিম পক্ষের দাবি, শিবলিঙ্গ নয়, সেটি আসলে ফোয়ারা।
এই বিতর্কের মধ্যেই বৃহস্পতিবার নাগপুরে সঙ্ঘের একটি সভায় ভগবত বলেন, "কিছু জায়গার সঙ্গে আমাদের ভক্তির প্রশ্ন জড়িয়ে। তা নিয়ে নিজেদের মতামতও জানিয়েছি আমরা। কিন্তু প্রত্যেক দিন নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করা উচিত নয়। এই বিবাদে ইন্ধন জোগানোই বা কেন? জ্ঞানব্যাপীর প্রতি নিজেদের শ্রদ্ধার কথা তুলে ধরেছি আমরা। তা নিয়ে পদক্ষেপও করছি। কিন্তু প্রত্যেক মসজিদে শিবলিঙ্গ খুঁজে বেড়াতে হবে কেন?"
আরও পড়ুন: Viral News: সাত পাক-সিঁদুরদানে নিজেই নিজেকে বিয়ে! মন্ডপ সাজছে ভাদোদরায়
মন্দির-মসজিদ বিতর্কে বিগত কয়েক মাস ধরে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির নানা দাবি সামনে আসছে। প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করবেন, ১৯৯২ সালের বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মতো পরিস্থিতি ফের তৈরি কার হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিতে শোনা গিয়েছে তাদের। কিন্তু ভগবতের মন্তব্য তার পরিপন্থী বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, "জ্ঞানব্যাপী নিয়ে আলোচনা চলছে। আণরা ইতিহাস পাল্টাতে পারব না। আজকের হিন্দু বা মুসলিম, কোনও পক্ষই এই ইতিহাস তৈরি করেনি। সবকিছু অতীতের ঘটনা। আক্রমণকারীদের হাত ধরে ভারতে ইসলামের প্রবেশ। দেবস্থানের উপর হামলা চালিয়ে নীতিবোধে আঘাত হানা, স্বাধীনতার স্বপ্নভঙ্গ করাই ছিল লক্ষ্য।"
সঙ্ঘের অবস্থান জানালেন ভগবত
ভগবত আৎও বলেন, "যে সমস্ত ধর্মস্থানের সঙ্গে হিন্দুদের শ্রদ্ধার প্রশ্ন বিশেষ ভাবে জড়িত, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি আমরা। হিন্দুরা মোটেই মুসলিম বিরোধী নন। আজকের মুসলিমদের পূর্বপুরুষ হিন্দুই ছিলেন। স্বাধীনতা থেকে তাঁদের দবরে রাখতে, নীতিবোধকে দমিয়ে রাখতে, তা করা হয়েছিল। তাই ধর্মীয় স্থানগুলিকে আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে চান হিন্দুরা। মনের মধ্যে অস্বস্তি থাকলে, তা বাড়বেই। এখানে কেউ কারও শত্রু নয়, মীমাংসার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। তাতেও রাস্তা না বেরোলে, আদালত রয়েছে। আদালতের রায় মাথা পেতে নিতে হবে। তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত নয়।" সঙ্ঘ পূজা-অর্চনা, প্রার্থনার ভিন্ন ভিন্ন রীতির বিরোধী নয় বলেও মন্তব্য করেন ভগবত। তাঁর মতে, ধর্মবিশ্বাস ভিন্ন হলেও, সকল ভারতীয়র পূর্বপুরুষ একই।