Sonu Nigam: পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলা নিয়ে 'বেঁফাস' মন্তব্য করে বেশ বিপাকে পড়েছেন গায়ক সোনু নিগম। তাঁর বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরুর থানায় দায়ের হয়েছে এফআইআর। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর ডাকও পড়েছে। নিজের মন্তব্যের স্বপক্ষে একবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সাফাই দিয়েছেন সোনু। ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন গায়ক। এবার সেই ইনস্টাগ্রামেই খোলা চিঠি লিখলেন সোনু নিগম। 

নিজের ইনস্টা পোস্টে সোনু লিখেছেন, শুধু কর্নাটকে থাকাকালীন নয়, বিশ্বের যে প্রান্তেই তিনি থাকুন না কেন, কর্নাটকের প্রতি অগাধ ভালবাসা প্রকাশ করেছেন তিনি। কন্নড় ভাষা, কর্নাটকের সংস্কৃতি, মিউজিসিয়ান, ওই রাজ্য এবং সেখনকার লোকজনের প্রতি ভালবাসা রয়েছে তাঁর। সকলেই জানেন, হিন্দির পাশাপাশি আরও অনেক ভাষাতেই গান গেয়েছেন সোনু নিগম। সেই তালিকায় রয়েছে, কন্নড় ভাষার গানও। সোনু জানিয়েছেন, হিন্দি-সহ অন্যান্য ভাষার গানের তুলনায় কন্নড় ভাষার গানকে তিনি অনেক বেশি শ্রদ্ধা করেন। সোনুর কথায়, 'সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে শত শত ভিডিও। সেগুলোই এর প্রমাণ। কর্নাটকের কনসার্টের জন্য আমার কাছে এক ঘণ্টারও বেশি সময় গাওয়ার মতো কন্নড় ভাষার গান তৈরি থাকে।'  

বেঙ্গালুরুর একটি টেকনোলজি কলেজে শো ছিল সোনু নিগমের। সেখানকার ঘটনা প্রসঙ্গে সোনু তাঁর ইনস্টা পোস্টে লিখেছেন, 'কারও থেকে অপমান সহ্য করার মতো বাচ্চা ছেলে আমি নয়। আমার বয়স ৫১ বছর। জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ে রয়েছি। সেখানে আমার ছেলের বয়সী একজন আমায় সরাসরি হুমকি দিচ্ছে, তাও আবার হাজার হাজার লোকের সামনে, সেটাও আবার কন্নড় ভাষা নিয়ে যা আমার কাজের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ভাষা এবং সেটাও কনসার্টে মাত্র একটা গান গাওয়ার পরেই। আরও কয়েকজনকে উস্কানি দেওয়ার চেষ্টাও করছিল ও। ওদের নিজেদের লোকেরাই বিব্রত হয়ে পড়ছিল, ওকে চুপ করতে বলছিল। আমি সকলকে খুব বিনয়েরসঙ্গে ভালভাবে বলেছিলাম যে শো সবে শুরু হয়েছে। এটা আমার প্রথম গান। আমি আপনাদের হতাশ করব না। শুধু আমাকে আমার প্ল্যানমাফিক অনুষ্ঠানটা করতে দিন। সব শিল্পীরই একটা পরিকল্পনা তৈরি থাকে। গানের তালিকা থাকে, যাতে মিউজিশিয়ান, টেকনিশিয়ান সকলে একত্রিত হতে পারেন। কিন্তু ওরা গন্ডগোল করছিল, ক্রমাগত ভয় দেখাচ্ছিল আমায়। বলুন তো ভুলটা কার?' 

সোনু আরও বলেছেন, 'একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে, যারা ভাষা, জাতি, ধর্মের নামে হিংসা তৈরির চেষ্টা করে, বিশেষ করে পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর, তাদের আমি ঘৃণা করি। ওদের শিক্ষা দেওয়া উচিত ছিল, আমি দিয়েছি। অনেক পড়ুয়া এবং শিক্ষকরা আমায় এর জন্য অভিবাদন জানিয়েছেন। ওখানেই বিষয়টা শেষ হয়ে যায়। তারপর এক ঘণ্টারও বেশি সময় আমি কন্নড় গান গেয়েছি। সেগুলো সবই সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে। 

সব শেষে গায়ক জানিয়েছেন, কর্নাটকের বিবেচক জনগণের উপরেই কে দোষী তা বিচার করার দায়ভার ছেড়ে দিচ্ছে। তাঁরা যা রায় দেবেন, সেটাই তিনি আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করবেন। কর্নাটকের পুলিশ প্রশাসন এবং আইনের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন সোনু নিগম। তারা গায়কের থেকে যা আশা করছেন, সেটাই তিনি করবেন। কর্নাটকের থেকে প্রচুর ভালবাসা পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন গায়ক। আর তা আজীবন মনে রাখবেন। শুধু তাই নয়, কর্নাটকের মানুষ যা রায় দেবেন, সেটাই তিনি কোনওরকম বিদ্বেষ ছাড়াও মাথা পেতে গ্রহণ করবেন।