মুম্বই : তাঁর উপমা তিনি নিজেই। সোনু সুদ। করোনাকালের তীব্র সংকটে দেশজুড়ে বারবার তিনি হয়ে উঠেছেন আর্তের 'মসিহা'। এবার সোনু গোটা একটা গ্রামের 'অন্নদাতা'-র ভূমিকায়। মধ্যপ্রদেশের মালওয়া অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রাম নিমাচের সমস্ত গ্রামবাসীকে দু-বেলা খাওয়ানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি।


অভিনেতা সোনু সুদ এক রিয়েলিটি শো-র বিচারক। সেখানেই এক প্রতিযোগী কাতর স্বরে তাঁর গ্রামের কথা জানিয়েছিলেন সোনুকে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় লকডাউন ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। করোনার শৃঙ্খল ভাঙতে যা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হলেও দিন-আনি, দিন-খাই লোকেদের বাস যে নিমাচ গ্রামে, সেখানকার লোক পড়েন চরম সমস্যায়। দু-বেলা দু'মুঠো খেতে পর্যন্ত তারা পাচ্ছেন না বলে সোনুর কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন রিয়েলিটি শো-র প্রতিযোগী উদয়। যিনি নিজেও পেশায় দিনমজুর।


যার পরই সোনু তাঁকে জানান, 'উদয় আমি তোমার মাধ্যমে তোমার সমস্ত গ্রামবাসীকে বলতে চাই ওখানে একমাস, দু'মাস, ছ'মাস যতদিনই লকডাউন হোক না কেন, সকল গ্রামবাসী যাতে রেশন পায় সেই ব্যবস্থা আমি করব। গ্রামবাসীদের চিন্তা করতে বারণ করো। তোমার গ্রামের কেউ অভুক্ত থাকবে না, সে লকডাউন যতদিনই চলুক না কেন।'


গতবার দেশে করোনার প্রথম ধাক্কা আছড়ে পড়ার পর থেকেই দেশবাসী চিনেছে অন্য এক সোনু সুদকে। দেশজোড়া লকডাউনের মাঝে হাজারো পরিযায়ী শ্রমিককে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা থেকে তাদের খাওয়ার বন্দোবস্ত। এমনকি চিকিৎসার জন্যও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।


গতকালই কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারগুলির কাছে এক বিশেষ আবেদনও রেখেছেন তিনি। কোভিড যে শিশুদের অভিভাবকদের কেড়ে নিচ্ছে, তাদের শিক্ষা যেন অর্থের কারণে কোনওভাবে না আটকে যায়, সেটা যাতে বিভিন্ন সরকার নিশ্চিত করে সেই আবেদনই রেখেছেন সোনু।


এবারে যখন দেশ মারাত্মক কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়ছে, সেখানেও একই রূপে দেখা মিলছে মসিহার। এবারে কিছুদিন আগে সোনু নিজেই করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। তবে আইসোলেশনে থাকার মাঝেও তাঁর দেশবাসীর জন্য কাজ থামেনি। করোনামুক্ত হয়ে উঠে নিজের কাজে আরও গতি বাড়িয়েছেন সোনু সুদ।


কিছুদিন আগেই নিজের ফোনে ক্রমাগত আসতে থাকা সাহায্য প্রার্থনার ভিডিও প্রকাশ করে সোনু বলেছিলেন, চেষ্টা করছি যতটা করা সম্ভব। যাদের কাছে পৌঁছতে পারছি না, তাদের কাছে মন থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।