চেন্নাই:  জীবনে অমরত্ব আসবে। এমনই উদ্ভট বিশ্বাসে স্বঘোষিত এক ভবিষ্যৎ বক্তা  তাঁকে সমাধিস্থ করতে বলেছিলেন স্ত্রীকে। তাঁর কথা মতো জীবিত অবস্থাতেই স্বামীকে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর পেরামবক্কমের এক মহিলা। এরইমধ্যে গত শুক্রবার কর্মস্থল থেকে ফিরে এসে পুরো ঘটনার কথা জানতে পারেন তাঁদের মেয়ে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন। 


সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পেরামবক্কমের কালাইনগর করুণানিধি নগরের বাসিন্দা নাগরাজ ছিলেন স্বঘোষিত ভবিষ্যৎ বক্তা। নাগরাজ দাবি করেছিলেন যে, তিনি ভগবানের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সম্প্রতি বলেছিলেন যে, রাজ্যের কয়েকটি মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর তিনি দৈব আশীর্বাদ পেয়েছেন। 


নিজের বাড়ির উঠোনে একটি মন্দিরও গড়েন তিনি এবং জীবনের ভবিষ্যৎ জানতে তাঁর মন্দিরে আসতে লোকজনকে আমন্ত্রণ জানান তিনি। এরইমধ্যে গত ১৬ নভেম্বর বুকে ব্যথা অনুভব করেন নাগরাজ। স্ত্রীকে ডেকে নাগরাজ বলেন, তিনি খুব শীঘ্রই মারা যেতে পারেন। তাঁর অল্প জীবন থাকতে থাকতে জীবীত অবস্থায় তাঁকে মাটিতে সমাধিতে দিতে স্ত্রীকে অনুরোধ করেন নাগরাজ। এমন করলে তিনি অমর হয়ে যাবেন বলেও স্ত্রীকে জানান নাগরাজ।


স্বামীর অনুরোধ মেনে নেন স্ত্রী লক্ষ্মী। পরের দিনই দুজনকে ডেরে গর্ত খোড়েন তিনি। জলের ট্যাঙ্ক বসানোর জন্য এই গর্ত খুঁড়ছেন বলে জানান লক্ষ্মী। 


গত ১৭ নভেম্বর নাগরাজ অচেতন হয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থাতেই তাঁকে গর্তে বসিয়ে মাটি চাপা দিয়ে দেন লক্ষ্মী। 


গত শুক্রবার কর্মস্থল থেকে বাড়িতে ফেরেন নাগরাজ ও লক্ষ্মীর মেয়ে থামিঝারাসি। পেশায় তিনি একজন প্রযুক্তিবিদ। বাড়িতে ফিরে বাবাকে দেখতে না পেয়ে অবাক হয়ে যান তিনি। বাবা নিখোঁজ। কিন্তু মা নীরব। এই পরিস্থিতিতে মাকে প্রশ্ন করতে শুরু করেন থামিঝারাসি। শেষপর্যন্ত লক্ষ্মী স্বীকার করে নেন যে, তিনি তাঁর স্বামীকে সমাধি দিয়ে দিয়েছেন। 


এরপর আর দেরি করেননি ওই দম্পতির মেয়ে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে পেরামবক্কম থানার পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ নাগরাজের দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে, সমাধির সময় নাগরাজ জীবিত ছিলেন, না মারা গিয়েছিলেন, তা একমাত্র ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পরই জানা যেতে পারে।