নয়াদিল্লি : ৬ জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর দিল্লি পুলিশের জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।  পুলিশ সূত্রে খবর, ২৬/১১-র মুম্বই হামলার ধাঁচেই নাশকতার ছক ছিল জঙ্গিদের।


এর জন্য পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওই জঙ্গিদের নিশানা বেছে বিস্ফোরণ ঘটাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পুরনো বিশ্বস্ত জঙ্গিদেরই বেছে নিয়েছিল দাউদ ইব্রাহিমের D কোম্পানি। দিল্লি পুলিশের দাবি, ধৃত জঙ্গি সমীর আগে D কোম্পানির হয়ে কাজ করেছে। সমীরই রায়বেরিলির মুলচাঁদ ওরফে লালাকে নিয়োগ করে। মুলচাঁদের কাজ ছিল বিস্ফোরক ও অস্ত্র পাচার করা।


দিল্লি পুলিশের দাবি, দুই জঙ্গিকে প্রশিক্ষণ দেয় এক পাক লেফটেন্যান্ট। ওসামা ও জিসান নামে দুই জঙ্গিকে প্রথমে পাক বন্দর গোয়াদরের কাছে জিওনি নামে একটি গ্রামে রাখা হয়।  ধৃত জঙ্গিদের মধ্যে পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছে দু’জন। ধৃতদের সঙ্গে পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল ১৪-১৫ জন বাংলাভাষীও।

মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে, এমনই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে দিল্লি পুলিশ। যা শোরগোল ফেলে দেয় গোটা দেশে। তারা জানিয়েছে, অভিযানে নেমে রাজস্থান, দিল্লি ,  উত্তরপ্রদেশ থেকে 
৬ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল কমিশনার নীরজ ঠাকুর জানান, '' মাল্টি স্টেট অপারেশেন চালাচ্ছিল ধৃত জঙ্গরা। ২ জন পাকিস্তানে গিয়ে এই বছরেই ট্রেনিং নিয়ে ফিরেছে। বিমানে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ২ জনকে। প্রথমে মাসকটে। সেখান থেকে জাহাজ বা নৌকায় পাকিস্তানে আসে। বিস্ফোরক তৈরি, একে ৪৭ চালানো শেখানো হয়েছে। ১৫ দিন ট্রেনিং হয়েছে। ট্রেনিংয়ের পর ফের মাসকটে যায়। দুই পাক প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের বিভিন্ন শহরে আসন্ন উৎসবে হামলার পরিকল্পনা ছিল। আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।'


দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গি-প্রশিক্ষণের জন্য যে পাকিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করা হচ্ছিল, তা-ও কার্যত পরিষ্কার হয়ে গেছে। তদন্তে উঠে এসেছে, পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গিরা দু’টো দলে ভাগ হয়ে কাজ করেছিল। এর মধ্যে একটা দল চালাচ্ছিল আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের ভাই আনিস ইব্রাহিম। এই জঙ্গিদের কাজ ছিল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অস্ত্র পাচার ও সেগুলো লুকিয়ে রাখা। জঙ্গিদের আরেকটা দল হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা জোগাড় করত। 


কিন্তু, ভারতের কোথায় কোথায় হামলার ছক ছিল এই জঙ্গিদের? তাদের কাজে লাগিয়ে কী ছক কষছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা ISI? পাকিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়া বাংলাভাষীরা কোথাকার? সেই প্রশ্নগুলো আতঙ্ক জিইয়ে রাখছে।