নয়াদিল্লি: এ বছরও প্রজাতন্ত্র দিবসের (Republic Day) অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের (West Bengal Government) ট্যাবলো পাঠানোর প্রস্তাব নাকচ করল কেন্দ্র (Central Government)। চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি উপলক্ষে দিল্লির অনুষ্ঠানে নেতাজি ও আইএনএ বিষয়ক ট্যাবলো পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্য সরকার। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের (Defence Ministry) তরফে সেই প্রস্তাব মৌখিকভাবে নাকচ করা হয়েছে। তবে এই মর্মে সরকারিভাবে কোনও চিঠি রাজ্য সরকারের কাছে পৌঁছয়নি। গতবছর রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, জল ধরো জল ভরো প্রকল্প নিয়ে ট্যাবলো পাঠানোর প্রস্তাবও নাকচ করে দেয় কেন্দ্র। ২০১৯-এ রাজ্য সরকারের তরফে দিল্লির প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে ট্যাবলো পাঠানো হয়।


প্রসঙ্গত, পরাক্রম দিবস (Parakram Diwas) নাকি দেশনায়ক দিবস! নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন ঠিক কোন নামে হবে, তা নিয়ে এর আগে চরমে উঠেছিল রাজনৈতিক তরজা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজির জন্মজয়ন্তীকে পালন করে পরাক্রম দিবস নামে। উল্টোদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য সরকার নেতাজি জন্মজয়ন্তী পালন করে দেশনায়ক দিবস হিসেবে। 


এনিয়ে চলতে থাকা বিতর্কের মাঝেই  কেন্দ্রকে কড়া সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘পরাক্রম দিবস, কেয়া হে পরাক্রম! হোয়াট ইজ দ্য মিনিং। আমাকে পছন্দ নাই হতে পারে রাজনৈতিকভাবে, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যদি আমাকে একটু জিজ্ঞেস করত, বা নিদেনপক্ষে সুগত বসুর কাছে পরামর্শ চাইতে পারত কোন শব্দটা ব্যবহার করা উচিত। নেতাজি আমাদের আবেগ, তাঁর সম্পর্কে কিছু ঠিক করতে ইতিহাসটা পর্যালোচনা করে নেওয়া জরুরি।’


তারপর আক্রমণের সুর আরও চড়িয়ে নাম না করে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোড়েন, ‘আপনি ভাল গুজরাটি শব্দ জানেন, আমি জানি না। কয়েকটা শব্দ জানি, পাঞ্জাবিতে বলতে বললেও কয়েকটা শব্দই বলতে পারব। কিন্তু আমি তো আর ভালোভাবে সেটা বলতে পারব না। কিন্তু বাংলার যে মানুষকে নিয়ে গোটা জাতির গর্ব। স্বর্ণখচিত ইতিহাস, তাঁকে ঘিরে কেন এই পরাক্রম শব্দ, কে নামটা দিল?’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নেতাজিকে দেওয়া দেশনায়ক তকমার জন্যই এই নামে জন্মদিবস পালন বলেও জানান তৃণমূল নেত্রী।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’যাক পরাক্রম নাম দেওয়া হলেও আমরা দেশনায়ক দিবস হিসেবেই দিনটা পালন করেছি। তার নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। ছাত্র-যুবরা মনে রেখো নেতাজিকে সর্বপ্রথম দেশনায়ক তকমা দিয়েছিলেন খোদ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তাই আমরা দেশনায়ক দিবস হিসেবেই দিনটা পালন করব। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষার হাত ধরে আমরা রবীন্দ্রনাথ-নেতাজিকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’