আগরতলা : ত্রিপুরায় পুরভোটের আগে আবার চড়ল রাজনৈতিক পারদ। এবার তৃণমূল নেতৃত্বকে হোটেলে থাকতে না দেওয়ার জন্য হুমকির অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ত্রিপুরার তেলিয়ামুড়ায় একটি হোটেলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওই হোটেলেই উঠেছেন তৃণমূলের ২ বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ও খোকন দাস।


"পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল নেতৃত্বকে যেন হোটেলে থাকতে না দেওয়া হয়"। হোটেল মালিকের স্ত্রীকে নাকি এমনই ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। এদিকে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারির দাবিতে থানায় প্রতিবাদ জানান তৃণমূল বিধায়করা। প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক কল্যাণী রায়।


পশ্চিমবঙ্গের গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি যে অভিযোগ তুলেছিল, এবার বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় ঠিক সেই অভিযোগই উঠছে পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একের পর এক পুরসভা দখল করেছে বিজেপি। মনোনয়ন তুলে নিয়ে, বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরার একটি কর্পোরেশন, ১৩টি পুরসভা এবং ৬টি নগর পঞ্চায়েতের ভোট। তিনটি স্তর মিলিয়ে মোট ৩৩৪টি ওয়ার্ডে ভোট। কিন্তু, ভোটের আগেই ১১২টি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছে বিজেপি। অর্থাৎ প্রায় ৩৪ শতাংশ ওয়ার্ড ভোটের আগেই বিজেপির ঝুলিতে চলে গেছে। 


ত্রিপুরায় আগরতলাই একমাত্র কর্পোরেশন। আগরতলা কর্পোরেশনে মোট আসন ৫১টি। তার মধ্যে ৮ জন বিরোধী প্রার্থী ইতিমধ্যে মনোনয়ন পেশের পরও তা প্রত্যাহার করেছেন। এর মধ্যে ৪ জন সিপিএমের, ১ জন ফরওয়ার্ড ব্লকের, ২ জন কংগ্রেসের এবং একজন নির্দল প্রার্থী। ১৩টি পুরসভার মধ্যে ৫টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছে বিজেপি। এই পুরসভাগুলি হল রানিরবাজার, মোহনপুর, বিশালগড়, উদয়পুর এবং শান্তিরবাজার। এছাড়া ২৫ আসন বিশিষ্ট ধর্মনগর পুরসভায় ১০ জন বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। ১৫ আসনের খোয়াই পুরসভায় ৪ জন, ১৫ আসনের তেলিয়ামুড়া পুরসভায় ২ জন, ১৩ আসনের মেলাঘর পুরসভায় ৫ জন বিরোধী প্রার্থী মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন। ৬টি নগর পঞ্চায়েতের মধ্যে দু’টিতে বিজেপি জিতে গেছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। মোট ৩৬ জন বিরোধী প্রার্থী এখনও পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। 


বিজেপির সন্ত্রাসের জেরেই প্রার্থীরা মনোনয়ন তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি সিপিএম-কংগ্রেসের। এবারই ত্রিপুরায় প্রথম পুরভোট লড়ছে তৃণমূল। তারাও বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। বিজেপি অবশ্য সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে। ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরা পুরসভায় ভোট। ২৮ নভেম্বর ফল ঘোষণা।