দীপক ঘোষ, অনির্বাণ বিশ্বাস ও মুন্না আগরওয়াল, কলকাতা : কী কারণে হঠাত্ করে পদত্যাগ করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ? বিজেপি সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। সেই কারণেই কি সরানো হল বিপ্লব দেবকে ? শুরু জল্পনা । সূত্রের খবর, বিপ্লব দেবকে রাজ্যসভার সাংসদ করতে পারে বিজেপি।
যে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ত্রিপুরাকে মডেল সেট করার কথা বলেছিলেন খোদ অমিত শাহ, শনিবার সেই মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দিলেন বিপ্লব দেব। এমনকী নিজের মেয়াদ শেষের আগেই মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়লেন তিনি।
বছর ঘুরলেই ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচন । কিন্তু তার আগে কেন এই আচমকা পদত্যাগ ? বিজেপি সূত্রে খবর, এর নেপথ্যে রয়েছে বিপ্লব দেবের সঙ্গে দল ও সরকারের একটা অংশের বনিবনা না হওয়া। গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, শনিবার বিপ্লব দেব আচমকা ইস্তফা দিলেও, এর জমি তৈরি হচ্ছিল অনেকদিন ধরেই।
বিজেপি সূত্রে খবর, বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে প্রধান তিনটি অভিযোগ উঠেছিল। নিজের মতো করে সরকার চালানো। দলের কোনও নেতার কথা না শোনা। সবাইকে নিয়ে চলতে না পারা। ত্রিপুরায় বিজেপির জোটসঙ্গী Indigenous Peoples Front of Tripura’র (IPFT) তরফেও বিপ্লব দেবের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সূত্রের খবর, এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে সরব ত্রিপুরার মন্ত্রী ও বিজেপি বিধায়কদের একটা বড় অংশ। একাধিকবার প্রকাশ্যেও এমন অভিযোগ সামনে এসেছে।
এনিয়ে গত বছর আগরতলার বিধায়ক ও বিজেপি নেতা সুদীপ রায় বর্মন বলেছিলেন, আমাদের যে ভিশন ডকুমেন্ট ছিল, তার ধারেকাছে নেই। কোনটা আগে, কোনটা পরে করতে হবে, তার মিনিমাম ধ্যানধারণা নেই। কারও সঙ্গে কনসাল্ট করে না। বাকি মন্ত্রীদের ভ্যালু নেই। শুধু ওয়ান ম্যান ভয়েজ আছে। অফিসারেরা তাঁর কথাই শুনছেন। তাহলে কে কী কাজ করবে।
এরপর এ নিয়ে একটি অভ্যন্তরীন তদন্ত করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর সেই তদন্তের পরই বিপ্লব দেবকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এনিয়ে বিপ্লবের বক্তব্য, প্রত্যেক কাজের একটা শৈলী থাকে। তার সময়সীমা থাকে। তার মধ্যে আমরা কাজ করি। আমাদের যেখানে যেখানে ফিট করা হয়, মুখ্যমন্ত্রী হোক বা অন্য পদ। বিপ্লব দেব সব জায়গায় ফিট।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বিপ্লব দেবের আচমকা এই ইস্তফা আগামী বছর বিধানসভা ভোটে কোনও প্রভাব ফেলবে কিনা, সেটাই দেখার।