নয়াদিল্লি: অবিবাহিত হোন বা সমকামী যুগল, তাঁদের সম্পর্কও পরিবারের আওতায় পড়ে, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, সমাজের চোখে ‘বিরল’ হিসেবে প্রতিপন্ন হলেও, রীতি বিরুদ্ধ মনে হলেও, এই ধরনের সন্ধিও বাস্তবিক এবং আইনের চোখে নিরাপত্তা পাওয়ার যোগ্য (Familial Relationship)।


সমাজের চোখে বিরল বা অস্বাভাবিক হলেও, অবিবাহিত এবং সমকামী সম্পর্কও পরিবারই, বলল সুপ্রিম কোর্ট


২০১৮ সালেই সমকামী সম্পর্ককে অপরাধমুক্ত ঘোষণা করে সীর্ষ আদালত। তার পর থেকে জায়গায় জায়গায় সমকামী যুগলদের পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হতে দেখা গেলেও, তাঁদের বিবাহ আইনি বৈধতা পায়নি আজ পর্যন্ত। সেই নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সমাজকর্মীরা। লিভ ইন সম্পর্কে থাকা যুগলরাও যাতে সন্তান দত্তক নিতে পারেন, সেই দাবিও উঠছে।


সেই আবহেই বিবাহবিচ্ছিন্না এক মহিলা আদালতের দ্বারস্থ হন। তিনি জানান, তাঁর স্বামীর আগের পক্ষে দুই সন্তান রয়েছে। তাঁদের লালন পালনের জন্য অফিস থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। এখন তাঁর নিজের গর্ভজাত সন্তানের জন্যও মাতৃত্বকালীন ছুটি চান। কিন্তু তাতে বেঁকে বসেছেন অফিস কর্তৃপক্ষ। সেই মামলার রায়েই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে আদালত।


আদালত জানিয়েছে, বিবাহবিচ্ছেদ হোক বা জীবনসঙ্গীর মৃত্যু, অথবা আলাদা থেকেও যদি একা কেউ সন্তানের লালন পালন করেন, এমনকি শিশুর অভিভাবকের দায়িত্বও যদি কেউ পালন করেন, সে পুনর্বিবাহ হোক বা দত্তক নিয়ে অথবা শুধুমাত্র প্রতিপালক হিসবে, সে ক্ষেত্রে সমাজের চোখে তথাকথিত পরিবার হিসেবে গন্য না হলেও, আইনত তাঁদেরও সবরকমের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য। অবিবাহিত এবং সমকামী সম্পর্কের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে আদালত।


আরও পড়ুন: Noida Twin Tower Demolition : নয়ডায় ধূলিসাৎ টুইন টাওয়ার, কত টাকার ক্ষতি ?


বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং এএস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চ আরও জানিয়েছে যে, কোনও পরিস্থিতিতে একজনের পারিবারিক পরিকাঠামোর পরিবর্তন ঘটতেই পারে। সামাজিক প্রত্যাশার সঙ্গে তা সঙ্গতিপূর্ণ না হতেই পারে। এই ধরনের পরিবার দুই অবিবাহিত মানুষ, সমকামী যুগলকে নিয়েও তৈরি হতে পারে। শুধুমাত্র কারও চোখে অস্বাভাবিক ঠেকছে বলেই এই পরিবারগুলিকে সামাজিক সুযোগ, সুবিধা, সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত করা যায় না।


মাতৃত্বকালীন ছুটি আইনি অধিকার, বলল সুপ্রিম কোর্ট


আদালত আরও জানিয়েছে, কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের যোগদান অব্যাহত রাখতেই ১৯৭২ সালে মাতৃত্বকালীন ছুটির আইন আনা হয়। কিন্তু বাস্তবে আজও সামাজিক চাপে বহু মহিলাকে সন্তানের জন্মের পর চাকরি ছাড়তে হয়। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়ে ঝামেলা দেখা দেয় কর্মক্ষেত্রে। সন্তানের জন্ম দেওয়াকে কর্মক্ষেত্রে বাধা বা বিঘ্ন হিসেবে দেখা উচিত নয় কোনও সংস্থার। বরং এটি জীবনের অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক ঘটনা। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই মাতৃত্বকালীন ছুটিকে দেখা উচিত সব সংস্থার।