লখনউ: তরুণদের প্রাধান্য দিতে গিয়ে দলের অন্দরে তো বটেই, পরিবারেও কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন তিনি। উত্তরপ্রদেশে তার প্রভাব পড়েছিল সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party) ভোটবাক্সেও। তাই ২০১৭ সালে গেরুয়া ঝড়ে উড়ে গিয়েছিল অখিলেশ যাদবের (Akhilesh Yadav) মসনদ। পুনরায় সেই মসনদের দখল পেতে এ বার সশরীরে এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে দলের হয়ে ময়দানে তিনি। মরণ-বাঁছনের লড়াইয়ে এই প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে (UP Assembly Election 2022) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অখিলেশ। রবিবার তাঁর তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণে তাঁর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ।


প্রথমে এ বারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে চাননি অখিলেশ। কিন্তু বিজেপি সর্বোপরি যোগী আদিত্যনাথকে (Yogi Adityanath) টেক্কা দিতে অখিলেশ যদি সম্মুখ সমরে না থাকেন, দলের কর্মীরা মনোবল হারাবেন বলে তাঁকে জানান এসপি শীর্ষ নেতৃত্ব। তাতেই অখিলেশের মন বদলায় বলে জানা গিয়েছে। তাতেই যাদব পরিবারের দুর্গ বলে পরিটিত মইনপুরীর করহল বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।


২০১৭ সালে বুন্দেলখণ্ডের অন্তর্গত ১৬টি জেলা এবং ৫৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে ওই এলাকায় গেরুয়া ঝড় বয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যেও মইনপুরী, ইটাওয়া, ফিরোজাবাদ, কাসগঞ্জ, এটা, ফারুখাবাদ, কনৌজ এবং অওরাইয়া আসনগুলিতে জয় নিশ্চিত বলে আশাবাদী এসপি। এর মধ্যে করহল আসনটিকে বেছে নিয়েছেন অখিলেশ। একমাত্র ২০০২ সালকে বাদ দিলে ১৯৯৩ সাল থেকে ওই আসন এসপি-র হাতেই থেকেছে।


আরও পড়ুন: Elections 2022: পঞ্জাবে শুরু ভোটগ্রহণ, উত্তরপ্রদেশেও আজ তৃতীয় দফার ভোট


এত দিন করহল আসনটি এসপি নেতা সোবরণ সিংহ যাদবের দখলে ছিল। অখিলেশের জন্য তিনি স্বেচ্ছায় আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন। একমাত্র ২০০২ সালকে বাদ দিলে, ১৯৯৩ থেকে একটানা মইনপুরীর করহলে জয়ী হয়ে আসছে সমাজবাদী পার্টি। এত দিন ওই কেন্দ্র দলের নেতা সোবরন সিংহ যাদবের দখলে ছিল। এ বার সেখান থেকেই প্রার্থী হচ্ছেন অখিলেশ। কিন্তু মুলায়ম-পুত্রের জন্য আসন হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ নেই সোবরনের। বরং সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, অখিলেশকে করহল থেকে ভোটে দাঁড়ানোর সুপারিশ তিনিই করেছিলেন। আবার মইনপুরী থেকেই পাঁচ বার সাংসদ হয়েছেন অখিলেশের বাবা তথা এসপি কুলপতি মুলায়ম সিংহ যাদব।


দীর্ঘ দিন রাজনীতিতে যুক্ত অখিলেশ। আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক পরিবারেই বড় হওয়া তাঁর। বিদেশে পড়াশোনা শেষ করে এসে রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অখিলেশ। কিন্তু সে বারও বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেননি তিনি। বরং বিধান পরিষদের সদস্যপদ গ্রহণ করে মুখ্যমন্ত্রী হন। তাই এ বারের লড়াই অখিলেশের কাছে মরণ বাঁচনের লড়াই। তাঁকে টেক্কা দিতে একদিকে যেমন তৈরি যোগী, তেমনই ভোটে অংশ না নিলেও, মাটি আঁকড়ে পড়ে থেকে দলের শিকড় বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীও (Priynka Gandhi)। একসময় অখিলেশের সঙ্গে রাজ্যে জোট ছিল কংগ্রেসের। কিন্তু কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে আপাতত ছোট দলগুলিকে নিয়েই রাজ্য থেকে বিজেপি-কে উৎখাতের লড়াইয়ে অখিলেশ।