প্রতাপগড় (উত্তরপ্রদেশ) : দশ কিলোমিটারের সাইকেল সফরেই সংবাদ শিরোনামে বিনয় কুমার। উত্তরপ্রদেশে প্রতাপগড় জেলার বোঝি গ্রামের বিনয় নিজের গ্রাম থেকে সাইকেল চড়ে পাশের রাজগড় গ্রামে গেলেন বিয়ে করতে। পাশে আরও সাইকেলে সঙ্গী বাকি বরযাত্রীরাও। সকলের সঙ্গে মুখে মাস্ক লাগিয়ে নির্দিষ্ট শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রেখেই জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিনে সাইকেলে সওয়ার হলেন বিনয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথেও এভাবে কোভিড নিয়মনীতি মেনে ও সচেতনতার বার্তা দিয়ে আপাতত নায়কের মর্যাদাই পাচ্ছেন বিনয়।


দেশে এই মুহূর্তে ভয়াবহ আকার নিয়েছে করোনা। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ ছুঁইছুঁই। টানা পাঁচদিন দুহাজারের বেশি ভারতীয়কে হারাতে হয়েছে আমাদের। এই পরিস্থিতি বিয়ের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান করতে গেলে যে যাবতীয় নিয়মনীতি মেনে চলাটা একান্ত প্রয়োজনীয়, সেই বার্তা দিতেই সাইকেল সওয়ারির ভাবনা নেন বিনয়।


তাঁর এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে বিনয় বলেছেন, 'শারীরিক দূরত্ববিধি এই মুহূর্তে মেনে চলাটা যে একান্ত প্রয়োজনীয়, সেই বার্তাটাই মনে করিয়ে দিয়ে চেয়েছিলাম। আমরা নিজেরা বা কনের বাড়ি থেকে দেওয়া গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে গেলে কোনওভাবেই সেটা মেনে চলা সম্ভব হত না। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করার জন্য তাই এই বিশেষ পদক্ষেপ।'


প্রতাপগড় জেলার এক ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন বিনয়। পরিবেশ রক্ষার্থে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যকলাপের সঙ্গেও যুক্ত থাকেন। বিনয় ও বরযাত্রীরা যখন সাইকেলে করে বিয়ে করতে পৌঁছন, তাদের দেখে মেয়ের গ্রামের বাসিন্দারাও মজা করার পথে হাঁটেননি। তারা করতালি দিয়ে বরযাত্রীকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি বিশেষ এই পদক্ষেপকে মোবাইলবন্দী করে রাখেন।


বিনয় যে পরিবেশ সচেতনতামূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত সেখানে কাজ করেন অজয় ক্রান্তিকারি। তিনিই বিনয় ও তাঁর বাড়ির লোককে প্রথমে ভাবনাটা জানিয়ে পরে রাজি করান সাইকেলে চড়ে বিয়ে করতে যেতে। অজয়ের মতে, গাড়ির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি এই করোনাকালে শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখতে সাইকেল সফর যে কতটা উপকারী, সেই বার্তা দেওয়াই লক্ষ্য ছিল। বিনয় ও তাঁর পরিবারকে ধন্যবাদ এভাবে এগিয়ে এসে ভাবনাটা বাস্তব করে দেখানোর জন্য।