নয়াদিল্লি: কখনও মোষের দলকে ধাক্কা, কখনও আবার ধাক্কা গরুর পালকে। তার জেরে গত তিন দিন ধরে তা নিয়ে খবরের শিরোনামে সুপারফাস্ট বন্দেভারত ট্রেন (Vande Bharat Train)। এ বার ট্রেনের চাকাই বসে গেল। তাতে যাত্রীদের নামিয়ে খালি করতে হল ট্রেন। সদ্য যাত্রা শুরু করা বন্দেভারতের জায়গায় ভরসা করতে হল আটের দশক থেকে যাত্রী পরিবহণকারী শতাব্দী এক্সপ্রেসকে (Shatabdi Express)। তাতে চেপেই গন্তব্যে পৌঁছলেন যাত্রীরা। 


চাকা বসে গেল বন্দেভারত ট্রেনের, শতাব্দী এসে উদ্ধার করল যাত্রীদের


শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে রওনা দেয় বন্দেভারত ২২৪৩৬ ট্রেনটি। কিন্তু খুরজা স্টেশনেই ট্রেনটির গতিরুদ্ধ হয়। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে,  দানকুর এবং ওয়েইর স্টেশনের মাঝে গতিরুদ্ধ হয়ে যায় ট্রেনটির। সি-৮ কোচের  বল বিয়ারিং চেপে বসে ট্র্য়াকশন মোটরটি বিকল হয়ে যায়। তার ফলে বসে যায় ট্রেনের চাকা। রেল পরিবহণের ক্ষেত্রে চাকা বসে যাওয়া বলতে বোঝায়, ট্রেনের টাকার বৃত্তাকার, মসৃণ পরিধির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা বসে যাওয়া।


রেলের এক আধিকারিক জানান, চাকা বসে যাওয়াতেই যাত্রীদের নামিয়ে ফেলা হয়। দিল্লি থেকে ডেকে আনা হয় শতাব্দী এক্সপ্রেসকে। তাতে চেপেই রওনা দেন যাত্রীরা। বিয়ারিং চেপে বসার সুরাহা করা গেলেও, ট্রেনটিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য় ডিপোয় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘটনাক্রম খতিয়ে দেখা হবে। কী কারণে এমন ঘটল, তার কারণ খুঁজে বার করবেন বিশেষজ্ঞরা।



আরও পড়ুন: Vande Bharat Train: মোদির হাতে উদ্বোধন ক’দিন আগেই, সটান মোষের দলকে ধাক্কা, ক্ষতিগ্রস্ত সুপারফাস্ট বন্দেভারত এক্সপ্রেস


রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্দেভারত ট্রেনে ১০৬৮ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের সকলকে শতাব্দী এক্সপ্রেসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দিল্লি থেকে সেই ট্রেন এসে পৌঁছতে এবং ফের গন্তব্য়ের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করতে বেজে যায় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে।


ট্র্যাকশন মোটর হল বিদ্যুৎচালিত মোটর। স্বচালিত, বিদ্যুৎ এবং হাইড্রোজেনচালিত ট্রেনগুলিতে এই মোটর থাকে। দ্রুত গতিসম্পন্ন বন্দেভারত ট্রেনের নিরাপদ যাত্রার জন্য এই মোটর ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু ওই মোটরের সঙ্গে যুক্ত বিয়ারংই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত বিশেষজ্ঞদের। একটু এদিক ওদিক হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে মত তাঁদের। তাই ট্র্যাকশন মোটরে সমস্যা হওয়াতেই নিরাপত্তার খাতিরে আপাতত ট্রেনটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।


দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বন্দেভারত এক্সপ্রেস সেমি-হাইস্পিড ট্রেন। এই ট্রেন সম্পূর্ণ ভাবে স্বচালিত, অর্থাৎ আলাদা করে কোনও ইঞ্জিনের দরকার পড়ে না। বাতানুকূল ট্রেনের দরজাও স্বয়ংক্রিয়। ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে ছুটলেও গ্লাস থেকে চলকে পড়ে না জল। ১৪০ সেকেন্ডে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি তুলতে সক্ষম এই ট্রেন। 


দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বন্দেভারত ট্রেন


শুধু তাই নয়, এই ট্রেনে রয়েছে ‘কবচ’ প্রযুক্তিও, যাতে অন্য কোনও ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগা এড়ানো যায়। ১৬ কামরার ট্রেনের প্রত্যেকটিতে এমার্জেন্সি টকব্যাক ইউনিটও রয়েছে। এই ট্রেন তৈরিতে খরচ পড়েছে ১১০ থেকে ১২০ কোটি টাকা। অতি সম্প্রতিই এই ট্রেনের উদ্বোধন হয়।