ট্রেন্ডিং





Welcome Year 2022: শুভ হোক সব, সেরে উঠুক পৃথিবী
Welcome Year 2022: ২০২১ যেমন অনেক কিছু কেড়ে নিয়ে গিয়েছে, তেমনই কংক্রিটের শহরে মায়ার বাঁধনে বেঁধে দিয়ে গিয়েছে সমাজকে। তাই গভীর রাতে অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেন শুনলে এখনও কেঁপে ওঠে বুক।

কলকাতা: লড়াই যখন অদৃশ্য শত্রুর সঙ্গে, তখন আপস ছাড়া উপায় নেই। গত দু’বছর যাবৎ তাই করে আসছেন মানুষ। নিজেকেই সান্ত্বনা দিয়ে চলেছেন। মনে মনে আউড়ে চলেছেন, ‘ঝড় থামবেই এক দিন। পৃথিবী ফের শান্ত হবেই’। ঝড় কবে থামবে জানা নেই। ইতিমধ্যে আরও একটা বছর এসে হাজির। ঝড়ের প্রাদুর্ভাব কাটার ইঙ্গিত নেই আপাতত। তবে ক্ষত সারিয়ে তুলতেই হবে।
ভোটপুজোর মতো নির্ঘণ্টের বালাই নেই। তাই আচম্বিতেই হাজির হয়েছিল করোনা। সেও ছিল এমনই বর্ষবরণের লগ্ন। তার পর থেকে যতবারই গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা হয়েছে, তত বারই বিষাক্ত ফণার ছোবল এসে পড়েছে গায়ে। যত বারই প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে গিয়েছেন মানুষ, মাস্কের বজ্রআঁটুনি ততই কঠিনতর হয়েছে।
শুধু কি তাই, তাবড় শক্তিধর রাষ্ট্র মুখ থুবড়ে পড়েছে। যমে-মানুষে টানাটানিতে মুছে গিয়েছে ধনী-দরিদ্রের বিভেদ রেখা। শ্মশানের বাইরের রোদ মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছেন বিদেশফেরত যুবক। তাঁর দিকে আলগোছে খাওয়া জলের বোতল এগিয়ে দিয়েছেন ভ্যানচালকের ছেলে। অক্সিজেনের অভাবে দামি এসইউভি গাড়ির ভিতর হাঁসফাঁস করতে করতে প্রাণবায়ু বেরিয়ে গিয়েছে কারও। আবার কারও লাশ ভেসে গিয়েছে গঙ্গায়।
আরও পড়ুন: Covid-19 : "যাঁদের জ্বর, গলায় ব্যথা রয়েছে, তাঁদের কোভিড পরীক্ষা করুন", রাজ্যগুলিকে বার্তা কেন্দ্রের
তাই ২০২১ যেমন অনেক কিছু কেড়ে নিয়ে গিয়েছে, তেমনই কংক্রিটের শহরে মায়ার বাঁধনে বেঁধে দিয়ে গিয়েছে সমাজকে। তাই গভীর রাতে অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেন শুনলে এখনও কেঁপে ওঠে বুক। ফিরে আসে টিভির পর্দায় প্রিয়জনের শবদেহ আঁকড়ে ধরে কান্নার দৃশ্য। মৃতদেহ রাখতে শ্মশানের বাইরে ফ্রিজের খোঁজ করা সেই মুখগুলি। ২০২১ মানুষকে বাচ্চা-বুড়ো সকলকে একধাক্কায় সাবালক করে দিয়েছে বললেও অত্যূক্তি হয় না। তাই নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বেড়েছে। মানুষ শান্তিপ্রিয়ও হয়ে উঠেছেন। অস্থিরতার ফাঁদ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে শিখেছেন।
পরিসংখ্যান বলছে, ফের একটা ঝড় নেমে আসতে চলেছে, যাতে ফের তছনছ হয়ে যেতে পারে নাগরিক জীবন। মারণ ভাইরাসকে নিঃশেষ করে দেওয়ার অস্ত্র এখনও হাতে পাইনি আমরা। কিন্তু দুর্দিনে পরস্পরের সহমর্মী হয়ে ওঠা, হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হওয়ার চেতনা এবং সহিষ্ণুতা নিহিত রয়েছে নিজেদের মধ্যেই। আড়ষ্টতা কাটিয়ে, বেড়াজাল ভেঙে শুধু এগিয়ে আসার অপেক্ষা। তাতেই সেরে উঠবে মানবতা, সেরে উঠবে পৃথিবী।