আমেদাবাদ: গুজরাতে অপ্রত্যাশিত রাজনৈতিক ঘটনাক্রমে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে হঠাৎই ইস্তফা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি।  এদিন তিনি তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিলেন রাজ্যপাল দেবব্রত আচার্যর কাছে। ইস্তফা দেওয়ার পর  বিজয় রূপানি সাংবাদিকদের বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের মানুষের সেবা করার সুযোগ দেওযার জন্য তিনি বিজেপি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। 


গত মাসেই মুখ্যমন্ত্রীত্বের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছিল রূপানির


হঠাৎ কী কারণে তাঁকে ইস্তফা দিতে হল, এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন রূপানি। তিনি বলেছেন, গত পাঁচ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের মানুষের সেবা করছেন।  এটা খুবই দীর্ঘ একটা সময়। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, বিজেপিতে এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।  


রূপানি জানিয়েছেন, বিজেপির সভাপতির নির্দেশিকা অনুযায়ী দলের সংগঠনের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, গত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকার মানুষের আস্থা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। 


উল্লেখ্য, ২০১৬-তে আনন্দিবেন পটেলের জায়গায় তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। তাঁর কার্যকালের পাঁচ বছর গত মাসেই পূর্ণ হয়েছে। যদিও এখনও স্পষ্ট নয়, গুজরাতের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন। মুখ্যমন্ত্রী পদের দৌড়ে মনসুখ মান্ডব্য সহ বেশ কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে। 


কেন ইস্তফা দিলেন রূপানি?


আসলে রূপানির ইস্তফা নিয়ে জল্পনা বেশ কিছুদিন আগে থেকেই চলছিল। মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পরও বিশেষ অনুষ্ঠান হয়েছিল। কিন্তু সূত্রের খবর, রাজ্য সংগঠনের রিপোর্ট রূপানির বিরুদ্ধে ছিল। রাজ্যে আগামী বছর বিধানসভা ভোট হবে। কিন্তু রিপোর্টে বলা হয়েছে, রূপানির নেতৃত্বে ভোটে জেতা সম্ভব নয়। দুদিন আগেই বিএস সন্তোষকে গাঁধীনগরে পাঠানো হয়েছিল। 


রূপানির ইস্তফার পর রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রদীপ সিংহ বলেছেন, আনন্দিবেন পটেলকে সরিয়ে রূপানিকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। তখন থেকেই এটা স্পষ্ট ছিল যে, তা স্টপ গ্যাপ ব্যবস্থা। কেননা, রূপানি জননেতা নন। নিজের ক্যারিশ্মায় দলকে জেতানোর ক্ষমতা তাঁর নেই।  তাঁকে নেতৃত্বে রেখে নির্বাচনে লড়াই কতটা কঠিন, তা দল ২০১৭-তেই দেখতে পেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রচারে ঝাঁপাতে হয়েছিল। এরপর কষ্টার্জিত জয় পেয়েছিল বিজেপি। এরপর থেকেই স্পষ্ট ছিল যে, রূপানি দীর্ঘদিন মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকবেন না।