নয়াদিল্লি: ভারতে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে দুই আক্রান্তর হদিশ মেলার পর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রক শুক্রবার জানিয়েছে, সরকার পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে এবং সময়ে সময়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম হদিশ মিলেছিল করোনাভাইরাসের নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের। তারপর থেকেই সারা বিশ্বজুড়ে ত্রাসের সঞ্চার ঘটিয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট। এমনকি টিকাপ্রাপ্তদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনকে গত ২৬ নভেম্বর উদ্বেগজনক তালিকায় রেখেছিল। করোনার এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে যে সমস্ত প্রশ্নগুলি ঘোরাফেরা করছে সাধারণ মানুষের মনে, সেগুলির উত্তর জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
ভারত কীভাবে ওমিক্রনের মোকাবিলা করছে?
ভারত সরকার পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলেছে এবং সময়ে সময়ে উপযুক্ত নির্দেশিকা জারি করছে। এরইমধ্যে চিকিৎসা ও বিজ্ঞানী মহল ডায়গোনস্টিকস, জিনোমিক নজরদারি, ভাইরাল ও মহামারী সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্য ও প্রতিষেধক সংক্রান্ত দিকগুলি নিয়ে কাজ করছেন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ওমিক্রনের কারণে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা খারিজ করে দিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলেছে, দেশে দ্রুতহারে টিকাকরণ চলছে। তাই এই রোগের তীব্রতা খুব বেশি হবে না বলেই অনুমান করা হচ্ছে।
আঘাত হানবে করোনার তৃতীয় ঢেউ?
দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরের দেশগুলিতে ওমিক্রন আক্রান্তর সংখ্যা বাড়ছে বলে দেখা গিয়েছে। এর বৈশিষ্ট্য়ের কারমে তা ভারতের মতো দেশগুলিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।যদিও এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের মাত্রা ও সবচেয়ে যেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, রোগের প্রকোপ কতটা বেশি হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তারওপর ভারতে দ্রুতহারে করোনার টিকাকরণ চলছে এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে উচ্চহারে সেরোপজিটিভিটির যে নমুনা মিলেছে, সেক্ষেত্রে ওমিক্রনের তীব্রতা কম হবে বলেই অনুমান। যদিও এ ব্যাপারে বৈজ্ঞানিক তথ্য় সংগ্রহের কাজ এখনও চলছে।
মন্ত্রক কোভিড ১৯ সংক্রান্ত সতর্কতামূলক বিধি অনুসরণ ও টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।
কী ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে?
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ আগের মতোই। সঠিকভাবে মাস্ক পরতে হবে। করোনা টিকার দুটি ডোজই নিতে হবে। বজায় রাখতে হবে শারীরিক দূরত্ব। বহু লোক থাকলে ভালো ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
বর্তমান টিকাগুলি কি ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কার্যকর হবে?
ওমিক্রনের বিরুদ্ধে বর্তমান ভ্যাকসিনগুলি কাজ করবে না, এমন কোনও প্রমাণ এখনও নেই। স্পাইক জিনের ক্ষেত্রে কিছু মিউটেশন বর্তমান ভ্যাকসিনগুলির কার্যকারিতা হ্রাস করতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে ভ্যাকসিন সুরক্ষা অ্যান্টিবডি ও সেলুলার ইমিউনিটির দ্বারাও হয়ে থাকে, যা তুলনামূলকভাবে ভালো থাকে। কাজেই তীব্র রোগের ক্ষেত্রেও ভ্য়াকসিন সুরক্ষা দেবে বলেই আশা। তাই বর্তমান ভ্যাকসিনগুলির মাধ্যমে টিকাকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টিকা নেওযার যোগ্য হলেও টিকা না নিয়ে থাকলে অবিলম্বে তা নেওয়া দরকার।