ডাবলিন: আয়ারল্য়ান্ডে নিগ্রহের শিকার ভারতীয় যুবক। ডাবলিনের রাস্তায় তাঁকে ধরে মারধর করা হল। রক্তাক্ত অবস্থায় ঘোরানো হল প্রায় অর্ধনগ্ন করে। বছর ৪০-এর ওই যুবক এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। ভারতীয় ওই যুবক বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠছে। (Indian Assaulted in Ireland)
শনিবার ডাবলিনের টালো-তে দুষ্কৃতীদের হাতে নিগ্রহের শিকার হন ওই ভারতীয় যুবক। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে যুবকের মুখে, হাতে, পায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখা গিয়েছে। টালো ইউনিভার্সিটি হসপিটালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। আইরিশ ন্যাশনাল পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। (Racism in Ireland)
শনিবার সন্ধে ৬টা নাগাদ ওই যুবক নিগ্রহের শিকার হন হলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন আয়ারল্যান্ডে ভারতের রাষ্ট্রদূত অখিলেশ মিশ্র। সোশ্য়াল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, ‘এমনি মারধর করলে এত গুরুতর আঘাত, রক্তপাত হয় কী করে?’ আহতকে সমবেদনা জানানোয় আয়ারল্যান্ডের সাধারণ মানুষ এবং পুলিশ-প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান তিনি। গোটা ঘটবায় কড়া পদক্ষেপের দাবিও তুলেছেন অখিলেশ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, হাসপাতালে আহত ভারতীয় যুবকের সঙ্গে দেখা করেন এলাকার কাউন্সিলর ফিনে গেল। তিনি জানান, আহত যুবক আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ঠিক করে কথা বলতে পারছেন না। মাত্র তিন সপ্তাহ আগে আয়ারল্যান্ড পৌঁছন ওই যুবক। আপাতত কারও সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন না।
এই ধরনের ঘটনা আজকাল প্রায়শই ঘটছে বলেও জানান ফিনে। পুলিশকে আরও সতর্ক হতে নির্দেশ দেন তিনি। বলেন, “মানুষকে বুঝতে হবে, কাজের অনুমতিপত্র নিয়েই এদেশে আসছেন ভারতীয়রা। কেউ পড়াশোনা করতে আসছেন, কেউ আবার স্বাস্থ্য, তথ্য়প্রযুক্তি এবং অন্য ক্ষেত্রে কাজ করতে। দক্ষতার জন্যই তাঁরা এই সুযোগ পেয়েছেন।”
ডাবলিন সাউথ-ওয়েস্টের রাজনীতিক শন ক্রো এই ঘটনাকে হিংস্র, বর্ণবিদ্বেষের ঘটনাবলে উল্লেখ করেন। এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “এই ধরনের বর্ণবিদ্বেষী আচরণ কারও জন্য নিরাপদ নয়। এই ধরনের আচরণের জন্যই বহু মানুষ বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পান।”
আইরিশ টাইমস জানিয়েছে, এই ঘটনাকে ঘৃণাপূর্ণ অপরাধ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিগ্রহের শিকার ভারতীয় যুবকের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনে একদল মানুষ। তিনি শিশুদের দেখে অভব্য আচরণ করছিলেন বলে অভিযোগ তোলা হয়। যদিও তদন্তে নেমে পুলিশ এমন কিছু পায়নি। যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা যেমন অপরাধী, যে বা যারা জাতিবিদ্বেষ, বর্ণবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, তারাও সমান অপরাধী বলে মত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পল মার্ফি।
আয়ারল্যান্ডের বিচার বিভাগের মন্ত্রী জিম ও’কালাহান জানিয়েছেন, বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলার প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু পরিসংখ্য়ান বলছে, জেলবন্দি অভিবাসীদের সংখ্য়া অনেকটাই কম। অভিবাসী মানেই অপরাধী, এই ধারণা দূর করতে হবে বলে মত তাঁর।