নয়াদিল্লি: ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারে আরও পতন। একটানা চার মাস ধরে লাগাতার পতন ঘটেই চলেছে। গত ১৬ মাসের হিসেব ধরলে, ১৫ মাসই সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণে পতন ঘটেছে। এই মুহূর্তে ভারতের রাজকোষে সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ গত ১১ মাসের তুলনায় সর্বনিম্ন। প্রায় ১০ শতাংশ পতন ঘটেছে। (Indian Forex Reserves)
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI) সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার হিসেব প্রকাশ করেছে। ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত যে হিসেব পাওয়া গিয়েছে, সেই অনুযায়ী, ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণে ১.৮৮ বিলিয়ন ডলারের ধস নেমেছে, ভারতীয় মুদ্রায় যা ১৬ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি। এই মুহূর্তে ভারতের ভাঁড়ারে সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ ৬২৩.৯৮৩ বিলিয়ন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৫৪ লক্ষ কোটি টাকা। (Indian Economy)
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ সর্বোচ্চে গিয়ে ঠেকে, ৭০৪.৮৯ বিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬০ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু তার পর থেকে ভারতের সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রায় ১০ শতাংশ ধস নেমেছে। ডলারের নিরিখে টাকার দামে যখন লাগাতার পতন ঘটেই চলেছে, সেই আবহে সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ কমতে থাকায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
RBI জানিয়েছে, এই মুহূর্তে তাদের কাছে মোট বিদেশি মুদ্রা সম্পদের পরিমাণ ৫৩৩.১৩৩ বিলিয়ন ডলার, প্রায় ৪৫ লক্ষ কোটি টাকা। সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রার অর্থ কোনও দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের অধীনে থাকা সম্পদ, যার মাধ্যমে ব্যালান্স মেটানো থেকে মুদ্রার ওঠাপড়া নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারের আত্মবিশ্বাস ধরে রাখা হয়। এর মধ্যে ব্যাঙ্কনোট, জমা থাকা অর্থ, সরকারি বন্ড, ট্রেজারি বিল, সোনা এবং SDR. বিদেশি মুদ্রা সম্পদের অর্থ, এমন সম্পদ যা বিদেশি মুদ্রায় মজুত সম্পদ। বিদেশি সম্পদ থেকে উদ্ভুত আয়ের হিসেব হয় বিদেশি মুদ্রাতেই।
ভারতের সঞ্চিত সোনার পরিমাণ এই মুহূর্তে ৬৮.৯৪৭ বিলিয়ন ডলার। গত সপ্তাহে ১.০৬ বিলিয়ন বৃদ্ধি চোখে পড়ে সোনা সঞ্চয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের হাতে এই মুহূর্তে যে সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রা রয়েছে, তা দিয়ে আগামী এক বছর পণ্য আমদানি করার জন্য পর্যাপ্ত। একবছর পণ্য আমদানির মতো সঞ্চিত মুদ্রা থাকাকে স্বাভাবিক হিসেবেই ধরা হয়। কিন্তু ভারতের হাতে যে পরিমাণ সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রা ছিল এবং তাতে যেভাবে ধস নেমে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
RBI বৈদেশিক মুদ্রার ওঠাপড়ার দেখভাল করে। টাকার দর নিয়ন্ত্রণে রাখতে কখনও কখনও হস্তক্ষেপও করতে হয় তাদের। টাকার পতন রুখতে ডলার বিক্রি করা হয়। আবার দর উঠলে কেনা হয় ডলার।