বেজিং: ২০১৯-এ ভারত জম্মু ও কাশ্মীরকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে টুকরো করে ‘একতরফা’ তার মর্যাদার বদল ঘটিয়ে বেআইনি, অবৈধ কাজ করেছে বলে অভিযোগ করল চিন। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের প্রথম বর্ষপূর্তির দিন এই প্রতিক্রিয়া দিল বেজিং। গত বছরের আজকের দিনেই সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করে সংসদ। তার তিন মাস বাদে গত অক্টোবরেই জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ, এই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়। নয়াদিল্লির এই পদক্ষেপের প্রভাব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে মতামত জানতে চাওয়া হলে চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, চিন কাশ্মীর এলাকার পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে। কাশ্মীর প্রশ্নে চিনের অবস্থান পরিষ্কার, স্পষ্ট, অবিচল। এটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ইতিহাসের অমীমাংসিত এক বিতর্ক। রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব, ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতেও বিষয়টি উঠে এসেছে।
কাশ্মীরের মর্যাদা বদল প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, স্থিতাবস্থায় একপেশে যে কোনও বদলই অবৈধ, বেআইনি। সংশ্লিষ্ট দুপক্ষের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পথেই এই ইস্যুর সঠিক সমাধান করা উচিত। পাকিস্তান ও ভারত দুজনেই প্রতিবেশী বলে উল্লেখ করেন তিনি, বলেন, এটা অস্বীকার করা যাবে না, সহাবস্থানই উভয়ের মৌলিক স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিন্ন আকাঙ্খা পূরণ করতে পারে। দুটি দেশ আলোচনার মাধ্যমে মতবিরোধ সঠিক ভাবে মিটিয়ে, সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে পারবে, যৌথ ভাবে উভয় দেশের ও বৃহত্তর এলাকার শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন সুরক্ষিত রাখতে পারবে বলে চিন আশা করে, এও বলেন ওয়াং। যদিও নয়াদিল্লি ও বেজিংয়ের মধ্যে কোন কোন এলাকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, তা উল্লেখ করেননি তিনি।
গত বছর বেজিং নয়াদিল্লিকে চিনা ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্বকে মর্যাদা দিতে বলে, সীমান্ত এলাকায় শান্তি, স্থিতাবস্থা বহাল রাখার কথাও বলে। বেজিং বিতর্কিত আকসাই চিনের উল্লেখ করে, যা চিনের দখলে আছে, যদিও নয়াদিল্লির দাবি, ওটা নতুন কেন্দ্রশাসিত এলাকা হওয়া লাদাখের অংশ। ভারত চিনের সমালোচনা উড়িয়েও জানিয়ে দেয়, লাদাখ সমেত নতুন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের সিদ্ধান্ত একান্তই তার ‘ঘরোয়া ব্যাপার’।