ওয়াশিংটন: পরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তার মধ্যেই ফের মারাত্মক অভিযোগ। আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত গোপন তথ্য চুরির অভিযোগ উঠল। শুক্রবার আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রীয় আইনজীবীরা খামবন্দি অভিযোগপত্র প্রকাশ করেছেন। তাতেই চাঞ্চল্য়কর অভিযোগ সামনে এসেছে। বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময়, পরমাণু অস্ত্র এবং আমেরিকার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন তথ্য হাতিয়ে নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন ট্রাম্প (Donald Trump Indictment)।
২০২৪ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ফের মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ৭৬ বছর বয়সি ট্রাম্প। তার মধ্যেই বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এল তাঁর বিরুদ্ধে। শুক্রবার যে ৪৯ পাতার চার্জশিট সামনে আনা হয়, তাতে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় কার্ডবোর্ডের বাক্সে ভরে গোপন সরকারি নথিপত্র নিয়ে যান ট্রাম্প। ফ্লোরিডায় তাঁর মার-এ-লাগো বাসভবনে সেগুলি নিয়ে যাওয়া হয়, যার মধ্যে রয়েছে পেন্টাগন, CIA এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার গোপন রেকর্ড। যে মার-এ-লাগো বাসভবনে সেগুলি তোলা হয়, সেখানে হাজার হাজার অতিথির সমাগম হয়। পার্টি-অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। ফলে ওি তথ্য মোটেই নিরাপদ নয় সেখানে।
শুধু তাই নয়, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র ট্রাম্প বাইরের লোকজনকে দেখিয়েছেন পর্যন্ত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। চার্জশিটে বলা হয়েছে, আমেরিকার সেনার গোপন অভিযান এবং পরিকল্পনা সংক্রান্ত নথি বাইরের লোকজনকে দেখিয়েছেন ট্রাম্প। নিউ জার্সিতে নিজের গল্ফ ক্লাবেই কমপক্ষে দু'-দু'বার সেগুলি বাইরের লোকের সামনে তুলে ধরেন তিনি।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৭টি পৃথক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে ৩১টিই জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন নথি নিজের কাছে রেখে দেওয়ার। প্রত্যেকটি অভিযোগের ক্ষেত্রেই ১০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে স্পেশাল কাউন্সেল জ্যাক স্মিথ বলেন, "দেশে কিছু নির্দিষ্ট আইন-কানুন রয়েছে। প্রত্যেকের উপরই তা প্রযোজ্য। বিশেষ করে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইন-কানুন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশের নিরাপত্তা। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় অপরাধ ধারায় দ্রুত মামলা এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।"
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও যে যে অভিযোগ রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। মিথ্যা সাক্ষ্যদান, সরকারি নথি আটকে রাখার অভিযোগও (দোষী প্রমাণিত হলে ২০ বছরের সাজা) রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। শুধু আমেরিকার প্রতিরক্ষা এবং পরমাণু অস্ত্র সংক্রান্ত তথ্যই নয়, অন্য কোন দেশের হাতে কী অস্ত্র রয়েছে, কত অস্ত্র রয়েছে, তাদের সামরিক ক্ষমতাই বা কত, সেই সংক্রান্ত তথ্যও ট্রাম্প হস্তগত করে নিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ।