ইন্দোর: ঠেলায় করে ফল বিক্রি করেন কিন্তু মুখে চোস্ত ইংরেজি। গত সপ্তাহেই রাইসা আনসারি নামে মধ্য প্রদেশের ইন্দোরের এক ফল বিক্রেতার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ইরেজিতে তিনি বলছিলেন, ইন্দোরে লকডাউন চালু হওয়ার ফলে তাঁদের কী কী অসুবিধে হয়েছে, পুলিশ কীভাবে উত্যক্ত করছে তাঁদের। এবার জানা গিয়েছে, রাইসা বেলজিয়ামে গবেষণার সুযোগ পেয়েছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্য, তাঁর যাওয়া হয়নি।
৩৬ বছরের রাইসা বিজ্ঞানী হতে চেয়েছিলেন। মেটেরিয়ালস সায়েন্স নিয়ে পিএইচডি করেছেন তিনি। সিএসআইআর ফেলোশিপে আইআইএসইআর কলকাতায় গবেষণা করছিলেন তখন। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর এক সিনিয়র কাজ করছিলেন বেলজিয়ামের একটি রিসার্চ প্রজেক্টে। তাঁদের রিসার্চ হেড রাইসাকে সেখানে যোগ দিতে ডাকেন, অফার লেটারও পাঠান। কিন্তু তাঁর পিএইচডি গাইডের এ ব্যাপারে সম্মতি দরকার ছিল। তিনি কাগজপত্রে সই করতে অস্বীকার করেন। ফলে বেলজিয়ামে গিয়ে গবেষণা করার সুযোগ রাইসার হাতছাড়া হয়ে যায়। আশাহত হয়ে কলকাতায় ফিরে আসেন তিনি। বলেছেন রাইসা।
রাইসা থাকেন ইন্দোরের পরদেশিপুরায় বেকারি স্ট্রিটে। বিজ্ঞানী হতে চেয়েছিলেন কিন্তু কোথাও কাজ জোটেনি। বাধ্য হয়ে পারিবারিক ফল বিক্রির ব্যবসার হাল ধরেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, পুরসভা আধিকারিকরা তাঁদের বিরক্ত করছেন, গরু ছাগলের মত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঠেলে সরানো হচ্ছে তাঁদের। তাঁর অভিযোগ, হয়তো ধর্মের কারণেই তিনি কাজ পাননি তবে ভারতীয় হিসেবে তিনি গর্বিত। এখনও কাজ খুঁজছেন তিনি। দেখুন তাঁর ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও
রাইসার দাবি, তাঁদের পরিবারে প্রায় ৫৫-৬৫ বছর ধরে ফল বিক্রির ঐতিহ্য রয়েছে। বাবার ৭৫ বছর বয়স হয়ে গিয়েছে, তাঁর হাত থেকে পারিবারিক ব্যবসার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। যে দেবী অহল্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাইসা পড়তেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্সের অধ্যাপক রাজকুমার চৌহান তাঁকে চিনতে পেরেছেন। রাজকুমার জানিয়েছেন, তিনি উজ্জ্বল ছাত্রী ছিলেন, খাটতেনও প্রচুর। তাঁর মেয়ের বিয়েতে ফলের ঝুড়ি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কেন তিনি ফলের ব্যবসায় যোগ দিলেন তা তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়।