নয়া দিল্লি : এবার ঋষি সুনকের (Rishi Sunak) হাতে ব্রিটেনের রাশ। লিজ ট্রাসের পদত্যাগের পর, টালমাটাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঘোষিত হয়েছে তাঁর নাম। আর এই খবরে উচ্ছ্বসিত তাঁর শ্বশুর তথা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা NR নারায়ণমূর্তি (Infosys co-founder Narayana Murthy)। জামাইয়ের সাফল্যের খবর পাওয়ার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ঋষিকে অভিনন্দন। আমরা ওঁর জন্য গর্বিত। ওঁর সাফল্য কামনা করি। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, ঋষি ইংল্যান্ডের মানুষের জন্য নিজের সেরাটা দেবে।


প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনকের ওপরই আস্থা রেখেছেন কনজারভেটিভ পার্টির (Conservative Party) সাংসদরা। শুক্রবার ঋষির শপথগ্রহণ। শনিবার তৈরি হবে নতুন ক্যাবিনেট। 


পারিবারিক বৃত্তান্ত-


ঋষি সুনকের দাদু ছিলেন পাঞ্জাবের বাসিন্দা। চাকরি নিয়ে ইংল্যন্ডে গেছিলেন ঋষির ঠাকুমা। বছর খানেক পরে, স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে তিনি চলে যান ব্রিটেনে।
সদ্য চল্লিশ পেরোনো ঋষি সুনকের জন্ম, ১৯৮০ সালের ১২ মে। ব্রিটেনের বন্দর শহর সাউদাম্পটনে। বাবা চিকিৎসক। মা ফার্মাসিস্ট। তাঁর ওষুধের দোকান ছিল। সাধারণ পরিবারে জন্মালেও, ঋষি’র দু’চোখে ছোট থেকেই ছিল আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন ! অক্সফোর্ড এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী ঋষি। রাজনীতিতে নামার আগে, ছিলেন একজন বিনিয়োগ ব্যবসায়ী। ব্রিটেনের অন্যতম বড় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ঋষি সুনক।


ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষির ভারতীয় যোগ আরও গভীরে ! তিনি, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা NR নারায়ণমূর্তির জামাই। নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতার স্বামী ঋষি সুনক। একসময় বেঙ্গালুরুতে এন আর নারায়ণমূর্তির গ্যারাজে তৈরি হয়েছিল ইনফোসিস ৷ ধীরে ধীরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে তা পরিণত হয় মহীরূহে ! শূন্য থেকে শুরু করে, যেমন শীর্ষে পৌঁছেছিলেন নারায়ণ মূর্তি। ঠিক তেমনই, উত্থান তাঁর ভারতীয় বংশোদ্ভূত জামাইয়েরও !


২০০৯ সালে, ক্যালিফর্নিয়ায় নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতার সঙ্গে পরিচয় হয় ঋষির। প্রথম দেখাতেই ভাল লাগা। সে বছরই বিয়ে করেন তাঁরা। ঋষি-অক্ষতার ২ মেয়ে। অনুষ্কা ও কৃষ্ণা। ঋষি’র রাজনীতিতে হাতেখড়ি ২০১৫ সালে। কনজারভেটিভের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে রিচমন্ড ইয়র্কশায়ার থেকে জিতে সাংসদ হন তিনি। তার পর আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি।


এক সময়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তার ফলে, বরিস-মন্ত্রিসভায় ‘চ্যান্সেলর অব দ্য এক্সচেকার’ বা অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ঋষি! ক্রমেই দলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন! বরিসের হয়ে, ‘ইরোপিয়ান ইউনিয়ান’ থেকে বেরিয়ে আসা অর্থাৎ, ‘ব্রেক্সিটে’র পক্ষে প্রচারও করেছিলেন সুনক। এই ঋষিই আবার বিভিন্ন সময় বিতর্কে জড়িয়েছেন। ইনফোসিসে তাঁর স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির অংশীদারিত্ব এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত আয় বাবদ অর্থের উপর কর না দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল। সেই সঙ্গে করোনা অতিমারির সময় লকডাউন অগ্রাহ্য করে ডাউনিং স্ট্রিটে হইহুল্লোড় করার অভিযোগও ওঠে ঋষি সুনকের বিরুদ্ধে। এরজন্য তাঁকে জরিমানাও দিতে হয়েছিল। ঋষি সুনকের স্ত্রী অক্ষিতার সম্পত্তির পরিমাণ, রানি এলিজাবেথের চেয়েও বেশি।


আরও পড়ুন ; প্রাইম মিনিস্টার ঋষি সুনক, ব্রিটেনের রাশ ভারতীয় বংশোদ্ভুতের হাতে