নয়াদিল্লি: শাহিদ কপূর অভিনীত বলিউডি ছবি কবীর সিংহ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অর্থোপেডিক সার্জন সেজে বিভিন্ন ডেটিং সাইটে নিজের প্রোফাইল খুলেছিল ৩১ বছরের এক যুবক। মহিলাদের থেকে টাকা আদায়ও চলছিল দিব্যি। কিন্তু শেষরক্ষা হল না, গ্রেফতার হল অভিযুক্ত।
ধৃতের নাম আনন্দ কুমার। তাকে ও তার সহ ষড়যন্ত্রী প্রিয়ম যাদবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, আনন্দ টিন্ডার অ্যাপে একটি ফেক প্রোফাইল খোলে, সেকানে নিজের পরিচয় দেয় চিকিৎসক রোহিত গুজরাল নামে। তারপর এক মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে কথোপকথন শুরু করে। কিছুদিন পর সে তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, তার কথায় বিশ্বাস করে ওই চিকিৎসক তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠান ৩০,০০০ টাকা। এতেই না থেমে তাঁর ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও জনসমক্ষে আনারও হুমকি দেয় সে। এরপর ওই মহিলা পুলিশে যোগাযোগ করেন। তখন প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনা।
মুম্বইয়ের সাইবার সেলের ডিসিপি অন্যেশ রায় বলেছেন, আনন্দ একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অফিস চালাত, মডেল ও অভিনেতা অভিনেত্রী হতে চাওয়া বহু নারী পুরুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত সে। তেমনই এক যুবকের ছবি নিয়ে সে টিন্ডার ও বাম্বলের মত নানা ডেটিং অ্যাপে ফেক প্রোফাইল বানায়, একইভাবে প্রোফাইল খোলে জীবনসাথী ডট কম নামে বিবাহের সাইটে। নিজেকে অর্থোপেডিক সার্জন হিসেবে পরিচয় দেয় সে।
কবীর সিংহ ছবিতে শাহিদ কপূর অর্থোপেডিক সার্জনের চরিত্র করেন। জেরার সময় আনন্দ জানিয়েছে, নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার বুদ্ধি তার আসে কবীর সিংহ দেখে। তাই সে এমনভাবে নিজের প্রোফাইল খোলে যাতে মহিলারা আকৃষ্ট হন। তবে মহিলাদের সঙ্গে সে ভিডিও কল করত না, বলত, মা অসুস্থ তাই ভিডিও কল সম্ভব নয়। কয়েকদিনের মধ্যেই বিয়ের কথা বলে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করে ফেলত। তারপর চেয়ে পাঠাত তাঁদের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও।
পাশাপাশি মেয়েদের ব্ল্যাকমেল করতে সে একটি গল্পও বানিয়েছিল। সে বলত, তার আনন্দ নামে এক বন্ধু আছে, আনন্দ তার ওপর অসন্তুষ্ট, কারণ তার বোনের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। আনন্দ এখন তাকে সেইসব গোপন ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেল করছে। মহিলাদের সে আনন্দের সঙ্গে দেখা করতে বলত, তাতে তাঁরা প্রায় কেউই রাজি হতেন না। তখন তাঁদের থেকে টাকা আদায় করতে তাঁদের গোপন ছবি আর ভিডিও প্রকাশ্যে আনার হুমকি দিত সে। মায়ের স্বাস্থ্যের কথা বলেও আদায় করত টাকা।
৪ মাস ধরে এই কারবার চালাচ্ছিল সে, বহু মহিলাকে ঠকিয়েছিল এইভাবে। কয়েকজন আবার তাকে বিশ্বাস করে ভেবেছিলেন, সত্যিই সে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, একদিন না একদিন তাঁদেরই বিয়ে করবে। এক মহিলা তো তার সাহায্যে ৫ লাখ টাকা ঋণের আবেদনও করেছিলেন।
এই সব কাজে তার সঙ্গী ছিল প্রিয়ম যাদব। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই মহিলারা টাকা পাঠাতেন আনন্দের জন্য।