নয়াদিল্লি: মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দশম দিনে সরাসরি ঢুকল আমেরিকা। ইরানের ৩ পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা সেনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস।
ইরানে আমেরিকার হামলার নিন্দা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সোশাল মিডিয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। অত্যন্ত শঙ্কিত বলে জানিয়েছেন তিনি। আন্তোনিয়ো গুতেরেস উল্লেখ করেছেন, "আমেরিকা যে ভাবে ইরানের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগ করেছে, তা দেখে আমি অত্যন্ত শঙ্কিত। এই অঞ্চল এমনিতেই খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে। আন্তর্জাতিক শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য এই অঞ্চল আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখানে একটা ভয়ানক উত্তেজনা তৈরি করা হল। এই সংঘাত এ বার হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। পশ্চিম এশিয়া এবং সারা বিশ্বের জন্য পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।''
ইরানের ৩টি পারমাণবিক কেন্দ্রে B-2 স্টিলথ বোমারু বিমান নিয়ে হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। ফোরদোতে ৬টি বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলা হয়েছে। এ ছাড়াও হামলা চালানো হয়েছে নাতানাজ ও ইসফাহানে। রাজধানী তেহরান থেকে আড়াইশো কিলোমিটার দক্ষিণে নাতানাজ পারমাণবিক কেন্দ্রেই রয়েছে ইরানের ইউরেনিয়ামের বৃহত্তম ভাণ্ডার। কোমের কাছে ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্র পাহাড়ে ঘেরা। মাটির প্রায় ৮০-৯০ মিটার গভীরে এই পারমাণবিক কেন্দ্র। অন্যদিকে, মধ্য ইরানে অবস্থিত ইসফাহানে রয়েছে সে দেশের বৃহত্তম পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র। চিনের সহযোগিতায় ১৯৮৪ সালে এই পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র চালু হয়েছিল বলে জানা গেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেনেজুয়েলার বিদেশমন্ত্রী ইভান গিল হামলার নিন্দা করেছেন। টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, "ভেনেজুয়েলা ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক আগ্রাসনের নিন্দা করছে। অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির দাবি জানাচ্ছে। ইজরায়েলে অনুরোধে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে আমেরিকা সেনার এয়ার স্ট্রাইকের ঘটনার কড়া ভাষায় নিন্দা করছে ভেনেজুয়েলা।'' এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে, কিউবাও। রাষ্ট্রপতি মিগুয়েল ডিয়াজ-ক্যানেলও সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন "ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে মার্কিন বোমা হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এতে মধ্যপ্রাচ্যে সঙ্ঘাতের পরিস্থিতি আরও তীব্র হবে। বিপজ্জনক বৃদ্ধি ঘটায়। এই আগ্রাসন রাষ্ট্রপুঞ্জের আইনের পরিপন্থী।'' একইভাবে আমেরিকার আগ্রাসনের কূটনৈতিক নীতির প্রেক্ষিতে উল্লেখ করেছেন মেক্সিকোর বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে সঙ্ঘাতে জড়ানো সব পক্ষের মধ্যে শান্তির জন্য কূটনৈতিক আলোচনা প্রয়োজন। দেশের বিদেশনীতির এবং শান্তির কথা মাথায় রেখে এই উত্তেজনা হ্রাস করার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রত্যেকের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই কাম্য।''