মধ্য প্রাচ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। শুক্রবার ভোর থেকে ইরানকে টার্গেট করে, অপারেশন রাইসিং লায়ন শুরু শুরু করে ইজরায়েল। চুপ করে বসে থাকেনি ইরানও। শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইজরায়েলের উপর। পরপর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় তেল আভিভ ও জেরুজালেমে । ইরান এই প্রত্যাঘাতের নাম দিয়েছে 'অপারেশন ট্রু প্রমিস ৩'। ইজরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে তেল আভিভ এলাকায় ইরানের প্রতিশোধমূলক হানায় ৩৪ জন আহত হয়েছেন, প্রত্যেকেরই সামান্য আঘাত লেগেছে । পরে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আহতদের একজনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার ইজরায়েলের হানায় ইরানের বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রাণ হারান ইরানের সেনা প্রধান মহম্মদ বাঘেরি, ইরানের এলিট ফোর্স 'রেভলিউশনারি গার্ডসে'র কমান্ডার হোসেন সালামি এবং ইরানের 'এমার্জেন্সি কমান্ডে'র কমান্ডারের। নিহত হন ইরানের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানিরও। এছাড়াও পারমাণবিক গবেষণাকারী অন্তত ৬ জন বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয়। এই হানার পর কার্যত গর্জে ওঠেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই । তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,খারাপ পরিণতির জন্য ইজরায়েল যেন প্রস্তুত থাকে।
ইরানের পাল্টা হামলার পর আতঙ্কের আবহ ইজরায়েলেও। রাজধানী তেল আভিভে শোনা যাচ্ছে সাইরেনের শব্দ। হাতপাতালে হাসপাতালে প্রস্তুত বেড। জানা গিয়েছে ইরানের হানায় আহত হয়েছেন বহু সাধারণ মানুষ। এক মহিলার মৃত্যুর খবরও মিলেছে। তেহরান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই এই হামলা শুরু হয়। ইজরায়েলের উপর ইরানের আক্রমণ এখনও অব্যাহতই। ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) তৃতীয় পর্যায়ের আক্রমণ শুরু করেছে বলে দাবি করেছে তেহরান।
অন্যদিকে, ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে, ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইরানি জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, "আমাদের লড়াই ইরানের ইসলামী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে, যারা তার নিজের দেশের মানুষের উপর উপর অত্যাচার চালাচ্ছে।" প্রধানমন্ত্রী ইরানি জনগণকে এই শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে এবং স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের মানুষের সঙ্গে আছি।"