কলকাতা:  ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কয়েকদিন পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ‘ফতোয়া’ জারি করেছেন ইরানের শীর্ষ শিয়া ধর্মগুরু গ্র্যান্ড আয়াতোল্লাহ নাসের মাকরেম শিরাজি। তাঁদের ‘ঈশ্বরের শত্রু’ আখ্যা দিয়ে মুসলমানদের প্রতি তাঁদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আহ্বান জানানো হয়েছে। 

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়াতোল্লাহ মাকরেম বলেন, “যে ব্যক্তি বা সরকার ইসলামি নেতৃত্বকে হুমকি দেয়, সে ‘মুহারিব'- অর্থাৎ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।” ইরানি আইনে মুহারিবদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড, অঙ্গচ্ছেদ, শূলে চড়ানো বা নির্বাসন দেওয়া হয়।                        

ফতোয়ায় আরও বলা হয়েছে, “এই শত্রুদের যে কোনও রকম সমর্থন বা সহযোগিতা করা হারাম, এবং বিশ্বের সব মুসলমানের দায়িত্ব এই শত্রুদের তাদের ভুলের জন্য অনুতপ্ত করানো।”

আপাতত সংঘর্ষবিরতি মেনে চলছে ইরান ও ইজরায়েল। কিন্তু আমেরিকার হামলার পরও, ইউরেনিয়ামের সমৃদ্ধকরণ করা তারা বন্ধ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইরান। ট্রাম্প অবশ্য ইরানের এই অবস্থানকে অলীক কল্পনা হিসেবেই দেখছেন। এদিকে বিভিন্ন মাধ্যমে খবর উঠে আসছে, ফের  ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারে ইরান। এই প্রসঙ্গে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আমরা কখনওই সামরিকভাবে তা হতে দেব না। হামলার পর ইরান পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে গেছিল। তারাই বলেছে অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক হামলা হয়েছে। এই হামলা না হলে ইরান থামত না। 

এদিকে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরাকচি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কখনওই বন্ধ করবে না ইরান। পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে সরে আসছে তেহরান। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ হয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT)।  

১৩ জুন ইরানের সামরিক কমান্ডার এবং পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে ইজরায়েল বিমান হামলা শুরু করলে ১২ দিনের তীব্র সংঘাত শুরু হয়। প্রতিশোধ হিসেবে ইরান ইজরায়েলি শহরগুলিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়ে আমেরিকা তিনটি ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালালে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়, যার ফলে ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।