নয়াদিল্লি: ইজরায়েলি হামলায় লেবাননে মৃত্যু হেজবোল্লা প্রধান শেখ হাসান নাসরাল্লার। শনিবার বিবৃতি দিয়ে এমন দাবি করেছে ইজরায়েলি সেনা। পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হাসান। শিয়াপন্থী ইসলামি সংগঠন হেজবোল্লাকে নেতৃত্ব দিতেন তিনি। গত কয়েক বছরে একবারও জনসমক্ষে আসেননি হাসান। ইজরায়েলি হানা থেকে বাঁচতে তিনি আত্মগোপন করে ছিলেন বলে জানা যায়। শুক্রবার তাঁকে নিশানা করেই বেইরুটে ইজরায়েলি সেনা হামলা চালায়। শনিবার তাঁর মৃত্যুর খবর জানাল তারা। (Hassan Nasrallah Dead)


আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা AFP হেজবোল্লার একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকেই হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর অনুগামীদের। এর পর শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মৃত্যুর ঘোষণা করেন ইজরায়েলি সেনার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদভ শোশানি। X হ্যান্ডলে সংক্ষেপে তিনি লেখেন, 'হাসান নাসরাল্লা মৃত্যু হয়েছে'। এর পর, ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর X হ্যান্ডলে লেখা হয়, 'আর পৃথিবীকে ভীত-সন্ত্রস্ত করতে পারবেন না হাসান নাসরাল্লা'। (Israel Lebanon War)


গতবছর অক্টোবর মাসে ইজরায়েলের সঙ্গে প্যালেস্তিনীয় সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে, প্যালেস্তাইন এবং হামাসের পক্ষ নেয় হেজবোল্লা। সেই থেকে সীমান্ত এলাকায় ইজরায়েলের সঙ্গে তাদেরও সংঘর্ষ শুরু হয়। সেই আবহেই সম্প্রতি একের পর এক হামলায় কেঁপে ওঠে লেবানন। প্রথমে প্রায় ৩০০০ পেজারে একসঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে, তার পর ওয়াকি-টকি বিস্ফোরণও ঘটানো হয় একই কায়দায়। দু'টি ঘটনাতেই ইজরায়েলের দিকে আঙুল ওঠে। 


এর পর একেবারে পূর্ণ শক্তিতে লেবাননে হামলা চালাতে শুরু করে ইজরায়েল। শুরু হয় রকেট, বোমা বর্ষণ। শুক্রবার ইজরায়েলের উত্তর অংশে রকেট ছোড়ে হেজবোল্লা। এর পর লেবাননের পূর্ব এবং দক্ষিণ অংশে হেজবোল্লার আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজরায়েল। শুক্রবার মধ্যরাতে একেবারে বেইরুটের আকাশে ঢুকে পড়ে ইজরায়েলি যুদ্ধবিমান। চলে এলোপাথাড়ি বোমাবর্ষণ। সেখানকার বাড়িঘর সব গুঁড়িয়ে গিয়েছে কার্যত। আর এই হামলাতেই হাসানের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।


লেবাননের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হাসানের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সশস্ত্র সংগঠন হেজবোল্লাকে তিনি সেনাবাহিনীর চেয়েও বেশি শক্তিশালী করে তুলেছিলেন। পশ্চিম এশিয়ার ভূরাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিলেন তিনি। হাসানের মেয়ে জায়নাবও ইজরায়েলি হামলায় মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এ নিয়ে হেজবোল্লার তরফে কোনও ঘোষণা হয়নি এখনও পর্যন্ত।