নয়াদিল্লি: গাজায় 'হামাস-নিকেশ' অভিযান হিসেবে শুরু হলেও অভিযোগ, ধীরে ধীরে চৌহদ্দি বাড়ছে ইজরায়েলি হামলার (Israel Attack kills Iranian Quds Force Commander)। সোমবার সিরিয়ার দামাস্কাসে ইরানের কনস্যুলেটে আকাশপথে হামলা চালায় ইজরায়েল। সেই হানায় মারা যান ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ড কপর্সের এক সিনিয়র কমান্ডার, অন্তত তেমনই দাবি ইরানের। নিহতের নাম মহম্মদ রেজা জাহেদি। তাঁর মৃত্যুর জন্য তেল আভিভের দিকে আঙুল তুলেছে তেহরান। জাহেদি ছাড়াও নিহতের তালিকায় ইরানের কূটনীতিবিদ রয়েছেন বলে খবর। তবে এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে ইজরায়েল কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, দামাস্কাসে ইরানের কনস্যুলেটের উপর ইজরায়েলের হামলা সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল।


হামলা নিয়ে...
কদিন আগে সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশে ঘাতক হানা দিয়ে অন্তত ৪০ জনকে শেষ করেছিল ইজরায়েল। নিহতদের মধ্যে ইরান-সমর্থিত 'হেজবোল্লা' জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্য এবং সিরিয়ার সেনাবাহিনীর আধিকারিকরাও ছিলেন বলে খবর। সেই হামলা নিয়েও কোনও মন্তব্য করেনি ইজরায়েল। যদিও ওয়াকিবহাল মহল জানাচ্ছে, সিরিয়ায় ইরান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির ঘাঁটিতে প্রায়ই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইজরায়েল। এদিনের ঘটনার পরও তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেন আমির-আবদোল্লাহিয়ান। সিরিয়ার বিদেশমন্ত্রীকে ফোনে তিনি জানান, সব রকম আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ভেঙে দিয়েছে তেল আভিভ। ওয়াকিবহাল মহল জানাচ্ছে, জাহেদি, সিরিয়া এবং লেবাননে ইরানের অভিজাত Quds Force-র কমান্ডার ছিলেন। লেবাননে হেজবোল্লার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রেও প্রধান ভূমিকা ছিল এই উচ্চপদস্থ সেনা কমান্ডারের। সিরিয়াতেও ইরান-পন্থী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দায়িত্ব ছিল জাহেদির। বস্তুত, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন ড্রোন হামলায় কাসেম সোলেইমানির মৃত্যুর পর তিনিও ছিলেন ইরানের রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের সবথেকে সিনিয়র অফিসার। তাঁর এমন মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে ইরান। 


সংঘর্ষ, রক্তপাত, নরকসম জীবন...
গাজার পরিস্থিতি যে ভয়ঙ্কর রকম উদ্বেগজনক, ইজরায়েলকে সে কথা বোঝাতে চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু প্রশাসন এখনও পর্যন্ত অনড়। যদিও পণবন্দি ফেরানোর জন্য হামাসের সঙ্গে সাময়িক সংঘর্ষবিরতির আলোচনাও চলছে। একদিকে হামলা, অন্য দিকে সংঘর্ষবিরতির জন্য আলোচনা-দুইয়ের মধ্যে ক্ষোভে ফুটছেন তেল আভিভ, জেরুজালেমের মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, নেতানইয়াহু প্রশাসন স্বার্থসিদ্ধির জন্যই এখনও তাঁদের প্রিয়জনদের ফেরানোর ব্যবস্থা করেনি। অন্য দিকে, গাজার যে দিকে  দু-চোখ যায়, ধ্বংসের নগ্ন ছবি। অনাহার, রোগভোগ ডালপালা মেলতে শুরু করে দিয়েছে, সতর্ক করছে আন্তর্জাতিক মঞ্চগুলি। মুড়িমুড়কির মতো প্রিয়জনদের হারাচ্ছেন মানুষ। এর মধ্যেই ইজরায়েলের এদিনের হামলা।