নয়াদিল্লি: ২০০৮ সালের মু্ম্বই হামলায় জঙ্গি হামলার মুখে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া ইজরায়েলি শিশুকে চিঠি লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ওই হামলার সময় মোশে হোলৎজবার্গের সময় ছিল মাত্র ২ বছর। নরিম্যান হাউসে (যা চাবাদ হাউস নামেও পরিচিত) আজমল কাসভদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মারা গিয়েছিল ছোট্ট মোশের বাবা-মা। যেদিন হামলা হয়, সেই অভিশপ্ত ২৬ নভেম্বরের ঠিক তার দুদিন পর ছিল মোশের জন্মদিন। বর্তমানে ইজরায়েলে বসবাস করে মোশে। গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গত ২৮ তারিখ ১৩ বছর পূর্ণ করে কিশোর। এই উপলক্ষ্যে ইহুদি ধর্ম অনুযায়ী, মোশের ‘বার মিৎঝভা’ হয়। ইজরায়েলি বিশেষজ্ঞদের মতে, এটা অনেকটা হিন্দুদের উপনয়নের মতো।



সেই উপলক্ষ্যে, মোশেকে হৃদয়-গলিয়ে দেওয়া বার্তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিশোরের দাদু রাবাই শিমন রোসেনবার্গ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির চিঠি পেয়ে ভীষণই উদ্বেলিত মোশে। ভারতের মতো একটা বিশাল দেশের প্রধানমন্ত্রী তাকে চিঠি পাঠিয়েছে, এটা ভেবে ভীষণই আনন্দিত সে। পাশাপাশি, দুজনের সাক্ষাতে মোদি তাকে যেভাবে জড়িয়ে ধরেছিল, মোশে তা স্মরণে রেখেছে বলেও জানান শিমন। তিনি এ-ও জানান, মোশের ওই অনুষ্ঠানে কূটনীতিকদের গোটা দলবল নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত। যা সকলের হৃদয় স্পর্শ করেছে।

ভারতের বুকে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলাটি ঘটেছিল ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর। ১০ সশস্ত্র লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি পাকিস্তান থেকে সমুদ্রপথে মু্ম্বইতে প্রবেশ করে। তাদের হামলায় ১৬৬ জন মারা যান এবং তিন শতাধিক আহত হন। নরিম্যান হাউসে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেখানে ৬ জন ইহুদি জঙ্গি হামলার শিকার হন। এর মধ্যে ছিল মোশের বাবা রাবাই গ্যাব্রিয়েল ও মা রিভকা হোলৎজবার্গ। তাঁরা চাবাদের দূত ছিলেন। মোশেকে পাঠানো চিঠিতে মোদি লিখেছেন, ভবিষ্যতে চাবাদের দূত হিসেবে মোশে মুম্বই যাত্রার জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। শিমন বলেন, এই কথাটা মোশেকে অনেক শক্তি জুগিয়েছে।



হামলার পর দেখা যায়, বাবা-মায়ের নিথর দেহের মাঝে বসে কাঁদছে ২ বছরের ছোট্ট শিশু মোশে। হামলার সময়ে নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না করে মোশেকে রক্ষা করেছিলেন পরিচারিকা স্যান্ড্রা স্যামুয়েল। মোশেকে বুকে জড়িয়ে রাখা স্যান্ড্রার ছবি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে চিঠিতে মোদি আরও লেখেন, তুমি তোমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে চলেছ। স্যান্ড্রার সাহসিকতা এবং সমগ্র ভারতবাসীর প্রার্থনার জোরে তোমার জীবন দীর্ঘ ও সুস্থ হয়ে উঠুক। তোমার গল্প সকলকে অনুপ্রাণিত করে। ওটা একটা অলোকিক ঘটনা ছিল। আশা করি, তুমি তোমার জীবনের বিপর্যয় ও অপূরণীয় ক্ষতির ধাক্কা কাটিয়ে উঠবে।