নয়াদিল্লি: আগামী অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দেবেন প্রিয়ম গর্গ। কিন্তু ক্রিকেট কেরিয়ারের এই স্বপ্নের উত্থান একেবারেই সহজ ছিল না প্রিয়মের। এরজন্য সমস্ত কৃতিত্ব নিজের বাবাকে দিয়েছেন ১৯ বছরের প্রিয়ম। বাবাই তাঁর কাছে ‘সুপার হিরো’।বাবার আত্মত্যাগ না থাকলে তাঁর কেরিয়ারের এই সাফল্য সম্ভব হত না তাঁর। আগামী ১৭ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হচ্ছে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ। খেতাব ধরে রাখার লক্ষ্যেই টুর্নামেন্টে অভিযান শুরু করবে প্রিয়মের নেতৃত্বাধীন ভারত।
উত্তরপ্রদেশের ছোট্ট শহর মীরাট থেকে উঠে এসেছেন প্রিয়ম। মা মারা গিয়েছেন অনেক আগেই। বাবা খবরের কাগজ ও দুধ বিক্রি করে তাঁর ক্রিকেট প্রশিক্ষণের খরচ চালিয়েছেন। স্কুল ভ্যানও চালাতেন প্রিয়মের বাবা নরেশ।
প্রিয়ম বলেছেন, নিজের জন্য খুব বেশি টাকা না থাকলেও তাঁর প্রয়োজন অর্থ দিতে কখনও ইতস্তত করেননি তাঁর বাবা। তিনি বলেছেন, বাবার কঠোর পরিশ্রম ও আশীর্বাদেই এতদূর উঠে এসেছি। তিনি আমার সুপারহিরো।
জুনিয়র ও ঘরোয়া ক্রিকেটে ঝুড়ি ঝুড়ি রান করেছেন প্রিয়ম। উত্তরপ্রদেশের হয়ে গত বছর দ্বিশতরানও করেছেন।
পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট প্রিয়ম ২০১১-তে মাকে হারান।এই ঘটনার পর পেশাদার ক্রিকেটে মনঃসংযোগে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য তাঁর পরিবারের অবদানের কথাও বলেছেন প্রিয়ম। তিনি বলেছেন, ২০১১-তে মায়ের মৃত্যু হয়।ওই সময়টা ছিল খুবই আবেগবিহ্বল।আমি খুবই ভেঙে পড়েছিলাম এবং আমার বাবা ও পরিবার ওই কঠিন সময় পেরিয়ে আসতে সাহায্য করেছে।
প্রিয়ম বলেছেন, আমাদের খুবই আর্থিক কষ্ট গিয়েছে। সবকিছু খুব একটা সহজ ছিল না। তার ওপর মায়ের মৃত্যুতে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। বাবার ট্রান্সপোর্টের ব্যবসা ভালো চলছে।
প্রিয়মের এক দাদা ফার্মাসিস্ট। তিনি জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে ক্রিকেট অকাডেমির দূরত্ব ছিল ২০ কিলোমিটার। সেখানে যাতায়াতের সময় তাঁর সঙ্গে বাবা বা তিন দিদি যেতেন।
প্রিয়ম বলেছেন, ছয় বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলছি। আট বছর বয়সে ভিক্টোরিয়া পার্কে যোগ দিই এবং এরপর থেকেই ক্রিকেটটা গুরুত্ব দিয়ে খেলতে শুরু করি।এখানে বাসে করে আসতাম। ওই সময় বাবা বা দিদিরা আমার সঙ্গে আসত। যাত্রাপথ দীর্ঘ ছিল, কিন্তু যেহেতু বাড়ির লোক থাকত, সেজন্য তা একঘেঁয়ে লাগত না।
প্রিয়মের আদর্শ সচিন তেন্ডুলকর। বাবার কঠোর পরিশ্রমের ঋণ কখনও তিনি শোধ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে ভালো খেললে তা হবে তাঁর পরিবারের কাছে সবচেয়ে বড় উপহার।এখন বিশ্বকাপে ভালো খেলার দিকেই নজর প্রিয়মের। তিনি বলেছেন, আমি সচিন তেন্ডুলকরের বড় অনুরাগী। আমার কাছে তিনি অনুপ্রেরণা।
বর্তমান খেলোয়াড়দের মধ্যে রোহিত শর্মাকে দেখে অনু্প্রাণিত হন প্রিয়ম।