নয়াদিল্লি: দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন অরুণ জেটলি। কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক বিষয়ে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি পারেনি এই অসুস্থতা। গত ৯ আগস্ট এইমসে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল। তার আগে পর্যন্ত একের পর এক ট্যুইটের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিষয়ে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর শেষ ট্যুইট ছিল গত সাত আগস্ট, তুলসীদাস জয়ন্তীতে। তার আগে গত ৬ আগস্ট প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী তথা মন্ত্রিসভার সহকর্মী সুষমা স্বরাজের প্রয়াণে মর্মবেদনার কথা জানিয়ে ট্যুইট করেছিলেন তিনি।




এর আগে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অভিনন্দন জানিয়ে ১০ টি ট্যুইট করেছিলেন। অসুস্থ প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী লিখেছিলেন, ‘নতুন কাশ্মীর নীতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অসম্ভবকে সম্ভব করার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। আজ আমার ব্লগে আমি এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ও জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানের ব্যর্থ চেষ্টার ইতিহাসের বিশ্লেষণ করেছি’।



জম্মু ও কাশ্মীর কোন পথের দিতে এগোচ্ছে তার বিস্তৃত ব্যাখ্যা দিয়ে জেটলি বলেন, ‘জম্মু ও কাশ্মীরের গত সাত দশকের ইতিহাস দেখিয়েছে যে এই পৃথক মর্যাদার যাত্রাপথ সংহতির দিকে নয়, বিচ্ছিন্নতাবাদের দিকেই এগিয়েছে। এটা একটা বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতির পুরোদস্তুর ফায়দা নিতে তত্পরতা দেখিয়েছে’।
জেটলি বলেছিলেন, ‘বিশেষ মর্যাদার ঐতিহাসিক ভুলের মাশুল দেশকে রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে দিতে হয়েছে। এখন ইতিহাস যখন নতুন করে লেখা হচ্ছে, তখন তা প্রমাণ করেছে যে, কাশ্মীর সম্পর্কে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সঠিক এবং নেহরুর স্বপ্নের সমাধান ব্যর্থ বলে প্রতিপন্ন হয়েছে’।
জেটলির ওই ট্যুইটগুলিতে আরএসএসের মতাদর্শের প্রতি তাঁর সুগভীর ঝোঁকের বিষয়টিই উঠে এসেছে। আরএসএসের ছাত্র সংগঠনের হাত ধরেই রাজনৈতিক জগতে এসেছিলেন তিনি।
জেটলি বলেন, সমস্যার সমাধানের জন্য বিকল্প উপায় গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নতুন সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, দেশের অন্যত্র যে ধরনের আইনের শাসন রয়েছে, তাই-ই কাশ্মীর উপত্যকাতেও থাকবে। তিনি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য স্বচ্ছতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও দৃঢ়সংকল্পতার প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেছিলেন।
অসুস্থ প্রাক্তনমন্ত্রী কংগ্রেসেরও সমালোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্তের সমর্থনে যে সমর্থন রয়েছে, তাতে বেশ কয়েকটি বিরোধী দলও সমর্থন জানাতে বাধ্য হয়েছে। কারণ, তারা বাস্তব অবস্থা বোঝে এবং জনগনের ক্ষোভের মুখে পড়তে চায় না। কিন্তু যে দল এই সমস্যার তৈরি করেছিল, সেই কংগ্রেস এই যুক্তি দেখতে পারছে না।

আজ শনিবার এইমস হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিজেপির এই প্রবীন নেতা। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে।