শ্রীনগর: চলতি বছরে তীব্র দাবদাহের সাক্ষী হয়েছে ভারত। তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির কোটাও ছাড়িয়ে গিয়েছে বেশ কিছু জায়গায়। ভূস্বর্গ জম্মু ও কাশ্মীরও এই দাবদাহের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। জুলাই মাসে দেশের একাংশ যখন জলমগ্ন, সেই আবহে উপত্যকার তাপমাত্রা রেকর্ড গড়ল। গত ২৫ বছরের তুলনায় এবছর জুলাই মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের তাপমাত্রা সর্বোচ্চে পৌঁছে গিয়েছে। (Jammu and Kashmir Weather)
উপত্যকার একাধিক জায়গায় দাবদাহের প্রভাব পড়েছে। আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রবিবার শ্রীনগরের তাপমাত্রা ছিল ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৯৯ সালের ৯ জুলাইয়ের পর এই প্রথম শ্রীনগরের তাপমাত্রা এত বেশি হল। ১৯৯৯ সালে তাপমাত্রার পারদ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে ঠেকেছিল। (Jammu and Kashmir)
এখনও পর্যন্ত শ্রীনগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্বাধীনতার আগে, ১৯৪৬ সালের ১০ জুলাই তাপমাত্রা ওই রেকর্ড গড়ে। এছর শুধুমাত্র শ্রীনগরই নয়, উপত্যকার একাধিক এলাকায় তাপমাত্রার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি চোখে পড়েছে। রবিবার কাজিগুন্ড এবং কোকেরনাগেও তাপমাত্রা তরতরিয়ে বেড়ে যায়। রবিবার কাজিগুন্ডের তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৮৮ সালের ১১ জুলাই সেখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।
রবিবার কোকেরনাগের তাপমাত্রা ৩৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। এবছর ৩ জুলাই সেখানকার তাপমাত্রা ছিল ৩৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৯৩ সালের ৮ জুলাই দক্ষিণ কাশ্মীরের তাপমাত্রা একবারই ৩৩ ডিগ্রির কোটা ছুঁয়েছিল। সেই থেকে এবার একধাক্কায় তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে, তাতে তাপমাত্রা কিছুটা নামতে পারে বলে অনুমান।
গত শীত থেকেই কাশ্মীরের তাপমাত্রায় বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, দিল্লিতে কাশ্মীরের চেয়ে বেশি ঠান্ডা পড়ে। তুষারপাতেও ঘাটতি দেখা যায়। সেই নিয়ে রাজনীতিকরা পর্যন্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। মে মাসে একাধিক জায়গায় তাপপ্রবাহের প্রকোপও দেখা দেয় এবছর। উপত্যকার আবহওয়ায় এহেন পরিবর্তনের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কাশ্মীরের আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে প্রভাব পড়েছে সেখানকার পর্যটন ব্যবসাতেও। প্রতি বছর শীতে সেখানে ভিড় করেন প্রকৃতিপ্রমীরা। বরফের উপর স্কি চলে। বিশেষ করে গুলমার্গের হোটেলগুলিতে জায়গা পাওয়া যায় না। কিন্তু এবছর হোটেল বুক করেও শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতি দেখে বাতিল করেন বহু পর্যটক। কিন্তু এবছর তার কিছুই হয়নি। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা উপত্যকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও।