শ্রীনগর : নতুন বছরের আগে জম্মু ও কাশ্মীরে বড়সড় জঙ্গিহানার (Terrorist Attack) ছক (Plan) বানচাল করল নিরাপত্তা বাহিনী (Security Forces)। খতম চার জঙ্গি। পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকালে ট্রাকে চড়ে জম্মু থেকে শ্রীনগর যাচ্ছিল ৪ জঙ্গি। সিধরা এলাকায় হাইওয়ের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী ট্রাক আটকাতেই জঙ্গিরা গুলি ছুড়তে শুরু করে। পাল্টা জবাব দেয় বাহিনী। জওয়ানদের গুলিতে মৃত্যু হয় চার জঙ্গির। 


পুলিশ জানিয়েছে, গুলির লড়াই চলাকালীন জঙ্গিদের ট্রাকে আগুন লেগে যায়। আগুন নেভানোর জন্য ঘটনাস্থলে দমকলের ইঞ্জিন আনা হয়। জম্মুর এডিজিপি মুকেশ সিং বলেন, ওই এলাকায় একটি ট্রাকের সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। চেক পোস্টের কাছে ট্রাকটিকে থামায় পুলিশ। সেই সময় লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। নিরাপত্তাবাহিনীর পাল্টা গুলিতে খতম চার জঙ্গিই। 
কিন্তু, পালিয়ে যায় ওই ট্রাক চালক। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। 


জ্বলন্ত ট্রাক থেকে প্রচুর পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা-বারুদ উদ্ধার হয়েছে। এডিজিপি জানান, "৭টি একে রাইফেল, একটি এম৪ কার্বাইন, তিনটি পিস্তল ও অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে।" ঘটনার পর ওই এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। হাইওয়ে দিয়ে যান চলাচলও থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।  


প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগে বিশাল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ (Arms and Ammunitions) উদ্ধার হয়। কার্যত "যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির" মতো মজুত করা ছিল। এর মধ্যে ছিল একে-৭৪ রাইফেল, পাকিস্তানে তৈরি হ্যান্ড গ্রেনেড ও বেলুন। যাতে লেখা "আই লাভ পাকিস্তান"। জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুল্লা জেলার উরি সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ওই আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হয়। এমনই জানান এক সেনা আধিকারিক (Army Officer)। 


পাকিস্তানের দিক থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশ এবং যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা-বারুদ কাশ্মীরে পাচারের আশঙ্কার আবহেই এই পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। কারণ, এই মুহূর্তে উপত্যকায় আগ্নেয়াস্ত্র বা গোলা-বারুদ কম পরিমাণে রয়েছে, বল মন্তব্য করেন ওই সেনা আধিকারিক।


সেনার ১৯ ইনফ্যান্ট্রি ডিভিসনের মেজর জেনারেল অজয় চন্দপুরিয়া বলেন, বিভিন্ন এজেন্সির কাছ থেকে গত দুই সপ্তাহ ধরে ইনপুট মেলে যে, অনুপ্রবেশের চেষ্টা হতে পারে এবং উরির রামপুর সেক্টরের হাতলঙ্গা এলাকার জঙ্গিরা যুদ্ধের রসদ মজুত করতে পারে। তার পরেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। হাথলঙ্গা এলাকায় গত শুক্রবার তল্লাশি অভিযান চলছিল। প্রায় ৮ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানোর পর আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা-বারুদ উদ্ধার হয়। উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে ছিল- আটটি একে-৭৪ রাইফেল, ২৪টি একে-৭৪ রাইফেল ম্যাগাজিন, ৫৬০টি ৭.৬২ মিমি একে-৭৪ লাইভ অ্যামিউনিশন, ২৪টি চাইনিজ পিস্তল ম্যাঙ্গানিজ-সহ অন্যান্য সামগ্রী। সেনা আধিকারিকের বক্তব্য, কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক। কারণ, জঙ্গি এবং যুদ্ধের রসদ সর্বকালীন কম অবস্থায় রয়েছে। 


আরও পড়ুন ; "যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির" মতো আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার উরির LOC বরাবর !