সোমবারের পর বুধবার। ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের ব্যবধান। আবারও একবার তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান। উত্তরের হোক্কাইডোয় রিখটার স্কেলে ৬.৫ মাত্রায় ভূমিকম্প হল এদিন। এমনই জানিয়েছে European Mediterranean Seismological Centre (EMSC)। ফলে, পুনরায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ৫৭ কিলোমিটার গভীরতায় কম্পন অনুভূত হয়। গত সোমবারই রিখটার স্কেলে ৭.৫ মাত্রায় কেঁপে উঠেছিল উত্তর-পূর্ব জাপান। যার জেরে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছিল এবং বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলে উদ্ধারকাজ।
গত সোমবার ৭.৫ মাত্রায় কেঁপে ওঠে জাপানের উপকূলবর্তী এলাকা। যার জেরে সুনামি সতর্কবার্তা জারি করতে হয়। প্রায় তিন মিটার উঁচুতে উঠে যায় ঢেউ। এমনই জানায় Japan Meteorological Agency (JMA)। যার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মানুষ। স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১৫ মিনিট নাগাদ জাপানের উত্তর ও পূর্ব প্রান্ত কেঁপে ওঠে। প্রভাব পড়ে হোক্কাইডো, আমেরি এবং ইওয়াতে এলাকায়। ভূমিকম্পের সময়ে কেঁপে ওঠা বিভিন্ন ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, ঝাড়বাতি এবং বিভিন্ন গাড়ি দুলে উঠছে। এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, "এক মিনিটের বেশি কম্পন অনুভূত হয়েছে।"
জাপান এমনিতেই ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে গণ্য হয়। ভূমিকম্প এবং তার দরুণ উদ্ভুত সুনামি জাপানে ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে আগেও সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই নিয়ে গত মার্চ মাসেই পাঁচ বছরব্যাপী একটি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে। বিজ্ঞানীরা জানান, জাপান উপকূলের ঠিক উল্টো দিকে, সমান্তরাল ভাবে যে চিশিমা পরিখা রয়েছে, তার নীচে মাটির গঠন অত্যন্ত বিপজ্জনক। সেখানে প্রশান্ত মহাসাগরীয় টেকটোনিক পাতটি নর্থ আমেরিকান পাতের নীচে ঢুকে রয়েছে। ফলে একটি ২২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যুতিরেখার সৃষ্টি হয়েছে। একটু এদিক ওদিক হলেই ভূমিকম্পের তীব্রতা রিখটার স্কেলে ৯ ছুঁয়ে ফেলতে পারে। সুনামি আছড়ে পড়লে ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে ২০ মিটার পর্যন্ত।
আবার হোক্কাইডোর পূর্বে কুরিল-কামচাটকা পরিখাও রয়েছে। আজ থেকে ৪০০ বছর আগে তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ওই অঞ্চল। তাতে জলভাগের দিক থেকে একটি পাত স্থলভাগের দিকে প্রায় ২৫ মিটার সরে আসে বলে জানা যায়। সেই থেকে যদি বছরে ৮ সেন্টিমিটার করেও ওই পাতটি সরে আসতে থাকে স্থলভাগের দিকে, তাতেও তীব্র ভূমিকম্পের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন বিজ্ঞানীরা।